National Epilepsy Day 2021: শিশুরাও আক্রান্ত হয় মৃগী রোগে! কীভাবে যত্ন নেবেন আপনার সন্তানের, পরামর্শ বিশিষ্ট চিকিত্সকের
শিশুদের মধ্যে যখন এই খিঁচুনি বা মৃগী রোগ দেখা দেয়, খুব স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে যান বাবা-মায়েরা। কীভাবে সামলাবেন সন্তানকে বুঝতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু এমন নয় যে এই রোগের চিকিৎসা নেই। তবে চিকিৎসার আগে জানতে হবে এই রোগের আসল কারণগুলি কী-কী।
মৃগী এমন একটি রোগ, যেখানে শিশু থেকে প্রাপ্তঃবয়স্কের যে কোনও ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারে। এটি মূলত নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়বিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে খিঁচুনির মতো লক্ষণ দেখা দেয়। তবে এখনও এই রোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা কুসংস্কার রয়েছে। এই কারণেই ১৭ নভেম্বর দেশ জুড়ে জাতীয় মৃগী রোগ সচেতনতা দিবস পালিত হয়।
শিশুদের মধ্যে যখন এই খিঁচুনি বা মৃগী রোগ দেখা দেয়, খুব স্বাভাবিকভাবেই ভয় পেয়ে যান বাবা-মায়েরা। কীভাবে সামলাবেন সন্তানকে বুঝতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু এমন নয় যে এই রোগের চিকিৎসা নেই। তবে চিকিৎসার আগে জানতে হবে এই রোগের আসল কারণগুলি কী-কী। এই বিষয়ে TV9 বাংলার সঙ্গে কথা বললেন শিশু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক সুমন পোদ্দার।
তিনি জানিয়েছেন, শিশুদের মধ্যে এই মৃগী রোগ বা খিঁচুনি দেখা দেওয়ার পিছনে কয়েকটি কারণ দায়ী। যেমন- জন্মের সময় যদি শিশুর মস্তিষ্কে কোনও গঠনগত সমস্যা থাকে, মস্তিষ্কে যদি স্নায়ু সংক্রান্ত সমস্যা থাকে, চিকিৎসার ভাষায় যাকে নিউরোন্যাল মাইগ্রেন ডিসওর্ডার বলা হয়। অনেক ক্ষেত্রে জন্মের সময় শিশুটি পরে কাঁদল, এই ক্ষেত্রে তার মাথায় অক্সিজেন পৌঁছাতে দেরি হয়, তখন মস্তিষ্কে একটা সমস্যা তৈরি হয়।
এছাড়াও বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে যদি মাথায় কোনও রকম আঘাত লাগে, ব্লিডিং হয় কিংবা স্ট্রোক সেখান থেকেও খিঁচুনি হতে পারে। কিংবা কোনও ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস সংক্রান্ত সংক্রমণ, টিবি, মশা বাহিত রোগ থেকে হওয়া সংক্রমণ থেকেও এই মৃগী রোগের উৎপত্তি হতে পারে। এছাড়াও কিছু সিন্ড্রোম থাকে যা জিনগত কারণে দেখা দেয়। তাই এই রোগের চিকিৎসা করার সময় চিকিৎসকরা ফ্যামিলি হিস্ট্রি সম্পর্কে জেনে নেন।
অনেক বাবা-মাই লক্ষ্য করেছেন যে, তীব্র জ্বরের সময় বাচ্চার খিঁচুনি শুরু হয়েছে। ভয় পেয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। ডঃ সুমন পোদ্দার জানিয়েছেন যে, জ্বরের সময় খিঁচুনি হলে এই বিষয়ে ভয়ের কিছু নেই। এই ধরনের খিঁচুনি শরীরের ওপর কোনও গুরুতর প্রভাব ফেলে না। উপরন্ত এই ধরনের খিঁচুনি সাধারণত ৫ থেকে ৭ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়।
যদি কোনও শিশু মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়, সেই ক্ষেত্রে কীভাবে সচেতনতা অবলম্বন করবেন অভিভাবকেরা?
৩-৪ বছর বয়সের পর থেকে বাচ্চারা অর্থাৎ যেসব বাচ্চারা সক্রিয়, তাদের সঙ্গে সব সময় একজন করে সক্ষম ব্যক্তিকে থাকতে হবে। মৃগী রোগের শিশুরা কখন একা ঘরে দরজায় ছিটকানি দিয়ে থাকবে না বা স্নান করবে না। এই ধরনের শিশুরা একা একা পুকুর ধারে, সুইমিং পুলে, আগুনের ধারে, সাইকেলিং করতে যাবে না। যদিও সুইমিং বা সাইকেল শিখতে যায় বা করতে যায়, তার সঙ্গে সব সময় আরেকজনকে থাকতে হবে; যাতে সেই সময় খিঁচুনি শুরু হলে ওই ব্যক্তি তাকে সামলাতে পারেন এবং কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে।
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানসিক সাপোর্ট দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন সুমনবাবু। যখন ওই শিশু একটু বুঝতে শিখবে তখন তাকে মানসিকভাবে এই রোগ সম্পর্কে অবগত করতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে যেহেতু সে এমন একটি রোগে আক্রান্ত, যেখানে তার বেশি রাত জাগা চলবে না। কোনও রকমের মানসিক চাপ নেওয়া চলবে না। যদি জ্বর আসে তাহলে সচেতন হয়ে সাবধান হতে হবে।
চিকিৎসার ক্ষেত্রেও কিছু সচেতনতা গ্রহণ করতে হবে রোগীর পরিবারকে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর চেক-আপ করাতে হবে এবং রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। নিজে থেকে হঠাৎ করে কোনও ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না।