World COPD Day: এই মরশুমে অবশ্যই জেনে রাখুন ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ় আসলে কী?
COPD: সুস্থ ফুসফুসের গুরুত্ব কতখানি, তা বোঝাতেই এই দিন পালন করা হয়।
ফুসফুসের সমস্যা যে কোনও ভাবেই অবহেলা নয়, তা আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে ছোট্ট এই ভাইরাস। করোনাভাইরাসের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ফুসফুসের, একথা সকলেই জানেন। এমনকী করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও ফুসফুসের সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি হচ্ছে। এছাড়াও দূষণের প্রভাবেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের ফুসফুস। খুব ছোট বয়স থেকেই দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা।
আর তাই এ বিষয়ে সকলকে আরও বেশি সচেতন করতেই ১৭ নভেম্বর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় World COPD day বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ দিবস। এই রোগটি এখন আর আমাদের কাছে একেবারেই অচেনা নয়। বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ এখন এই সমস্যায় আক্রান্ত। এই অসুখে মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুসের মধ্যে থাকা বাতাস ভর্তি থলি অ্যালভিওলাই।
যার ফলে বুক ভরে শ্বাস নেওয়া খুবই অসুবিধের হয়ে পড়ে। একবার কাশি শুরু হলে থামতেই চায় না, তেমনই কাশির সঙ্গে হাঁপানির সমস্যাও আসে। যাঁরা এই ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে আক্রান্ত, তাঁরা যখন শ্বাস নেন তখনও কিন্তু সাঁই সাঁই আওয়াজ হয়।
COPD-এর কারণ
এই রোগের মূল কারণ কিন্তু ধূমপান। যাঁরা নিয়মিত ধূমপান করেন তাঁদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও যাঁরা নিয়মিত গ্যাস, দূষিত বায়ু এবং বিশেষ রাসায়নিকের সংস্পর্শে থাকেন তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এই সমস্যা হয়। বায়ু দূষণও ফুসফুসের অসুখের অন্যতম কারণ। আর তাই ধূমপান না করলেও COPD-তে আক্রান্ত হতে পারেন।
এক দিকে বায়ুদূষণ অন্য দিকে ধূমপান, এই দুইয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে প্রথমে শ্বাসনালী, পরে ফুসফুস ক্রমশ অকেজো হতে শুরু করে। কোভিড ১৯ অতিমারির আগে সিওপিডি (COPD) বিষয়টি বেশির ভাগ মানুষের কাছে অপরিচিত ছিল। এমনকী যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হতেন তাঁরাও কিন্তু এই অসুখের নাম জানতেন না।
আজকাল মহিলারাও কিন্তু এই সিওপিডি-তে আক্রান্ত হচ্ছেন। যার মূল কারণ কিন্তু রান্নাঘরের ধোঁয়া। তবে আমাদের দেশেও দূষণ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে ভবিষ্যতে এই সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বাড়বে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের একাংশের।
সিওপিডি (COPD)-এর লক্ষণ
সর্জদি-কাশি-কফ, শ্বাস নিতে না পারা থেকে সমস্যার সূত্রপাত। তবে ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। প্রায়শই ঠান্ডা লাগা, বুকে সংক্রমণ, বুকে ব্যথা, অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট এসব লেগেই থাকে। যাঁরা সিওপিডি-তে আক্রান্ত হন তাঁদের ওজন দ্রুত কমতে থাকে। সেই সঙ্গে হাত, পা, পায়ের পাতা এসব বিবর্ণ হতে শুরু করে।
যে সব সতর্কতা অবশ্যই মেনে চলবেন
যদি আপনি নিয়মিত ধূমপান করেন, তাহলে অবিলম্বেই ধূমপান বন্ধ করতে হবে। কারণ ধূমপানের নেশা ত্যাগ করতে না পারলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যে কোনও রকম নেশা থেকে দূরে থাকুন।
এমন কোনও গ্যাস কিংবা রাসায়নিকের সামনে থাকবেন না যেখান থেকে ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে।
বদ্ধ জায়গায় থাকবেন না। খোলামেলা পরিবেশে থাকুন। খোলা বাতাসে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করুন।
প্রতিদিন প্রাণায়ম করুন। পুষ্টিকর খাবার রাখুন ডায়েটে। সেই সঙ্গে বাড়ি এবং আশপাশ সব সময় পরিষ্কার রাখুন।
চিকিৎসা
ফুসফুসের সমস্যা থাকলে ঠান্ডা না লাগানোর চেষ্টা করুন। এছাড়াও নিয়মিত ব্রিদিং এক্সসারসাইজ অবশ্যই করবেন। তবে নিজে থেকে কোনও ওষুধ খাবেন না। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অবশ্যই নিন। অনেকের ক্ষেত্রে লাং ট্রান্সপ্ল্যান্ট (lung transplant) সার্জারিও পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করুন।