National Testosterone Awareness Day 2021: আপনার প্রতিদিনের অভ্যাসই শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দিচ্ছে, সমাধান জেনে নিন…
বয়স্ক ব্যক্তিদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম থাকে। ৩০ বছর বয়সের পরে প্রতি বছর এই হরমোনের মাত্রা নাকি ১% হারে ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। তবে, কিছু উপায় আছে যেগুলো মেনে চললে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব...
টেস্টোস্টেরন একটি যৌন হরমোন যা পুরুষ এবং মহিলা দুজনের মধ্যেই থাকে। যদিও এটা প্রধানত পুরুষ হরমোন তবে মহিলাদের মধ্যেও কম পরিমাণে এই হরমোন থাকে। এটি প্রাথমিকভাবে অণ্ডকোষ, মহিলাদের ডিম্বাশয় এবং কখনও কখনও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলিতে তৈরি হয়।
টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পুরুষের বয়ঃসন্ধি এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য নানান পরিবর্তনগুলির (কণ্ঠস্বর পরিবর্তন, চুলের বৃদ্ধি, পেশী গঠন এবং গভীর কণ্ঠস্বর) জন্যই দায়ী থাকে। এছাড়াও, টেস্টোস্টেরনের মাত্রা যৌবনকালীন স্বাস্থ্যের উন্নতি আর বিকাশের জন্যও অপরিহার্য। যেমন ধরুন, ভাল টেস্টোস্টেরনের মাত্রা উৎকৃষ্ট স্বাস্থ্যের জন্য দায়ী হয়, অর্থাৎ, রোগের ঝুঁকি কম হয়। এমনকি শরীরের গঠনের জন্যও মারাত্মক উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে।
মহিলাদের জন্যও, পর্যাপ্ত টেস্টোস্টেরন সাধারণ স্বাস্থ্য এবং যৌন সুস্থতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাবার বা জীবনযাত্রা নারী, পুরুষ উভয়ের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। এটি অনুমান করা হয় যে বয়স্ক ব্যক্তিদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম থাকে। ৩০ বছর বয়সের পরে প্রতি বছর এই হরমোনের মাত্রা নাকি ১% হারে ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। তবে, কিছু উপায় আছে যেগুলো মেনে চললে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব…
১) যথাযথ ব্যায়াম: ব্যায়াম শুধুমাত্র আপনার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন ঘটায় যে তা নয়, এটি শরীরের দুর্বল টেস্টোস্টেরন ভারসাম্যের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে বর্ধিত শারীরিক কার্যকলাপ, বিশেষত, ওজন উত্তোলনের মতো ব্যায়ামের ফর্মগুলি স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধির একটি ভাল উপায় হতে পারে।
২) ডায়েটে প্রোটিন, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য: এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা যা খাই তা আমাদের হরমোনের কার্যকারিতা এবং সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে। অতএব, আমরা যে ডায়েট অনুসরণ করি তাও প্রধানত টেস্টোস্টেরনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে। হরমোনের ভাল মাত্রার জন্য, আপনার মোট ক্যালোরি গ্রহণের দিকে মনোযোগ দিন। আর সেই কারণে আপনার দৈনন্দিন খাদ্যে পর্যাপ্ত প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করুন।
৩) স্ট্রেসের মাত্রা কমান: আমরা সকলেই এটা খুব ভাল করেই জানি যে স্ট্রেস আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর। একইভাবে, অতিরিক্ত চাপ আমাদের শরীরের টেস্টোস্টেরনের মাত্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। উচ্চ মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসল নিঃসরণ করতে পারে। কর্টিসলের মাত্রা বেশি হলে তা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা খুব দ্রুত কমাতে পারে। দুর্বল মানের স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট আপনার ওজন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং অন্ত্রের কার্যকারিতাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
৪) ভিটামিন ডি: সমস্ত ভিটামিনের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর অভাব টেস্টোস্টেরনের মাত্রা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। প্রাথমিক গবেষণায় এখন দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি একটি প্রাকৃতিক হরমোন নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে পারে এবং একাধিক স্বাস্থ্যের মান উন্নত করতে পারে।
৫) ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার ঘুম: প্রতিদিন ভাল ঘুমের সুবিধা বা গুরুত্ব যে ঠিক কতটা সে বিষয়ে বলে ব্যক্ত করা সম্ভব নয়। ভাল ঘুম শুধু আপনাকে রিচার্জ এবং শক্তি জোগায় তাই নয়, ভাল ভাবে বিশ্রাম নেওয়া এবং ভাল ভাবে ঘুমানো নিশ্চিত করে যে আপনার টেস্টোস্টেরনের মাত্রা যাতে সব সময় ঠিক থাকে। টেস্টোস্টেরন বা অন্যান্য হরমোনের কোনো ঘাটতি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার ঘুম অত্যন্ত জরুরি। ঘুম ভাল হলে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিমেষের মধ্যে হারিয়ে যায়।