ওমিক্রনের বাড় বাড়ন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্যকর্মী এবং ষাটোর্ধ্বরাই পেয়েছেন এই বুস্টার টিকা। সেই সঙ্গে যাঁদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্যও বরাদ্দ করা হয়েছচিল কোভিড টিকার তৃতীয় ডোজ। ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশন (NTAGI)-কোভিড টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ব্যবধান রেখেছিল ১২-১৬ সপ্তাহ। অর্থাৎ এই সময়সীমার পর যাঁরা কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন তাঁদের সেকেন্ড ডোজ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই ব্যবধান কমিয়ে ৮-১৬ সপ্তাহে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে নতুন এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে ৬০ বছর বা তার বেশি প্রত্যেককেই দেওয়া হবে কোভিডের বুস্টার ডোজ। যদিও এখনও জানানো হয়নি যে ১৮ বছরের কম বয়সীদের এই ডোজ দেওয়া হবে কিনা। ইংল্যান্ডে ইতিমধ্যে সকলকেই দেওয়া হচ্ছে কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ। সেই সঙ্গে এশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন জায়গায় স্বাস্থ্যকর্মী এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত রয়েছেন তাঁদের সকলকে চতুর্থ ডোজ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ইজরায়েল প্রথম দেশ যারা কোভিড টিকার চতুর্থ ডোজ ইতিমধ্যেই দিয়ে ফেলেছে। এরপর তালিকায় রয়েছে চিলি ও সুইডেন। তবে ইজরায়েলের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সব বয়সের সকলের জন্যই এই চতুর্থ ডোজ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভারতে এখনও পর্যন্ত ৯ টি ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের জন্য শুরু হয়েছে টিকাকরণ। আপাতত শিশুদের জন্য Corbevax-এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৬ মার্ড থেকে শিশুদের জন্য শুরু হয়েচে টিকাকরণ। এখনও পর্যন্ত ৪৮ লক্ষেরও বেশি কোভিডের টিকা পেয়েছে। ২১ মার্চ থেকে ১২ বছরের কম বয়সীদের জন্যও শুরু হয়েছে টিকাকরণ। তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৭ কোটি শিশুর টিকাকরণের উদ্দেশ্য রয়েছে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। ৩ জানুয়ারী থেকে শুরু হয়েছিল ১৫-১৮ বছর বয়সীদের জন্য টিকাকরণ। এখনও পর্যন্ত ৯.২৪ কোটি শিশুকে দেওয়া হয়েছে কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ। এই বয়সীদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ টিকার প্রথম ডোজ পেলেও বাকি ২৫ শতাংশ এখনও পর্যন্ত কোনও ডোজই পায়নি।
তবে কোভিডের এই বুস্টার ডোজের উপরেই কিন্তু বার বার জোর দিতে চাইছেন বিশেষজ্ঞরা। সতর্ক থাকতেই এই ভাবনা তাঁদের। ৬০ বছর বয়সী বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তিদের এই বুস্টার ডোজ দিলে তাঁদের মধ্যেও বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বলা ভাল ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে লড়াই করার সুযোগ থাকবে। এবং যাঁদের বিভিন্ন কোমর্বিডিটি রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রেও কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ কিন্তু উপকারী। আপাতত যাঁদের বয়স ১৮+ তাদের নিয়ে ততটাও উদ্বেগ নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক মহলের একাংশ। কারণ ভারতে কোভিড ঢেউ নিম্নগামী। ভ্যাকসিনের যথেষ্ট যোগান রয়েছে, যে কারণে ধীরে ধীরে সকলকেই সেই ডোজের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আপাতত মানুষের মধ্যে যাতে অযথা আতঙ্কের সৃষ্টি না হয় সেই দিকটিই নিশ্চিন্ত করতে চাইছেন তাঁরা। বয়স্কদের সুরক্ষা সুনিশ্চিন্ত করতেই কিন্তু তাঁদের আগে বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।