গরম পড়তেই ফের ফ্রিজে ঠান্ডা জল রাখার (Cold Water) অভ্যাস শুরু হয়ে গিয়েছে বাড়িতে বাড়িতে। রোদ থেকে ফিরে ঠান্ডা পানীয়তে গলা না ভেজালে যেন আর চলছেই না। নুন-চিনি-লেবু সহযোগে শরবত খাওয়ার চল এখন প্রায় উঠেই গিয়েছে। পরিবর্তে প্রায় সকলেই পছন্দ করছেন নরম ঠান্ডা পানীয়। ছাড়াও থাকে ঘোল, লস্যি, ফলের রস। তবে নরম পানীয় (Soft Cold Drink) কিন্তু শরীরের জন্য মোটেই উপকারী নয়। কারণ এই সব পানীয়ের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি। যা আমাদের অজান্তেই শরীরে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। হঠাৎ রদের থেকে বাড়িতে ফিরে ঠান্ডা কিছু খেলে আরাম লাগে ঠিকই কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ঠান্ডা জল শরীরের জন্য কিন্তু আদৌ উপকারী নয়। বরং আসতে পারে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা (Health Problem)।
আর তাই রোদের থেকে ফিরেই কিন্তু ফ্রিজ খুলে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জল খাবেন না, বরং ফ্যানের তলায় ঘাম শুকিয়ে শরীরের তাপমাত্রা সাধীরণ ঘরের তাপমাত্রায় এলে তারপরই জল খান। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ঠান্ডা জল খেলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়ে দাঁতের ভেগাস নার্ভের উপর। এই ভেগাস স্নায়ু হল আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এবং এর সঙ্গে যোগ রয়েছে হৃৎপিন্ডের। তাই বেশি ঠান্ডা জল খেলে ভেগাস স্নায়ু উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। যার ফলে হৃদগতি অনেকটাই কমে যেতে পারে। যে কারণে সানস্ট্রোকের সম্ভাবনা থেকে যায়।
এছাড়াও অতিরিক্ত ঠান্ডাজল খেলে রক্তনালী সংকুচিত হয়ে পড়ে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত সঞ্চালনও কিন্তু বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর এই সমস্যা এড়াতেই ঠান্ডা জল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
গরম থেকে এসে হঠাৎ করে ঠান্ডা জল খেলে সর্দি-কফির সমস্যা বাড়ে। অতিরুক্ত শ্লেষ্মা জমতে পারে। শ্বাসনালীতে এই শ্লেষ্মা যদি দিনের পর দিন জমে তাহলে সেখান থেকে কঠিন সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়।
কোনও খাবার খাওয়ার পরও কিন্তু ঠান্ডা জল বা আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংক খাবেন না। এতে খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। কারণ শরীর হঠাৎ ঠান্ডা হয়ে গেলে হজমে সাহায্যকারী উৎসেচক ঠিকমতো কাজ করে না। ফলে তখন হজম প্রক্রিয়া শুধু যে ধীর হয়ে যায় তাই নয়, থেকে যায় বদহজমের সম্ভাবনাও।
আর তাই ব্যায়ামের ঠিক পরে বা খুব রোদ-গরম থেকে আসলে ফ্রিজ খুলে ঠান্ডা জল একেবারেই খাবেন না। এতে হৃদরোগের সম্ভাবনা যেমন বেড়ে যায় তেমনই শরীরের আভ্যন্তরীণও ক্ষতি হয়। আর নিয়মিত ভাবে ঠান্ডা জল খাওয়ার অভ্যাস আমাদের ওজন বাড়িয়ে দেয়। রোদের দিনে চেষ্টা করুন বাড়িতেই বিভিন্ন শরবত বানিয়ে খেতে। আম পোড়ার শরবত, বেলের পানা, লস্যি, ঘোল এসব কিন্তু শরীরের জন্য খুবই ভাল।