আপনি কি সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠেন এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন? নাকি আপনি ‘নাইট আউল’ অর্থাৎ ‘নাইট পার্সন’? অর্থাৎ সারারাত জেগে বসে থাকেন এবং সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন? এই ধরনের ব্যক্তিদের পেঁচা বলা হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন, ঘুমের এই অভ্যাস একটি শারীরিক অবস্থার সঙ্গে জড়িত যাকে বলে ‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’ (Delayed Sleep Phase Syndrome)। বিষয়টি নিয়ে TV9-এর তরফে বেশ কিছু প্রশ্ন রাখা হয়েছিল মেডিসিন-বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাসের কাছে।
‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’ কী?
‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’ (DSPS)-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঘুমের চক্র বা সাইকেল আলাদা হয়। এইসব ব্যক্তি গভীর রাতে কিংবা ভোররাতে ঘুমোতে যান এবং এই কারণে সকালে সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারেন না। ৭-৮ ঘণ্টার ঘুমটা এঁদের পূরণ হয় না। ফলে পরদিন সকালে ক্লান্তি থেকে যায়। দৈনন্দিন কাজকর্ম করার সময় ঘুম পায়। মূলত ‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’-এর কারণে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যায়।
কোন কারণে ‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’-এর সমস্যা দেখা দিতে পারে?
‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’-এর সমস্যার পিছনে বেশ কিছু কারণ থাকে। কারও যদি ক্রনিক ইনসোমনিয়া থাকে, তাঁর ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা দেওয়াটা স্বাভাবিক। যদিও সেটা ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়। যদি কারও অ্যানজ়াইটি, ডিপ্রেশনের সমস্যা থাকে, তাহলেও এই ‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও শারীরিক ক্রিয়াকলাপ (ফিজ়িক্যাল এক্সারসাইজ়) কম হলে এই সমস্যা দেখা দেয়। লকডাউন চলাকালীন অনেকেই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’-এর সমস্যা প্রতিরোধ করবেন কীভাবে?
ঘুমের সার্কলটা ঠিক রাখা জরুরি। অ্যানজ়াইটি কমালে ঘুমের সময়টা ঠিক হয়ে যেতে পারে। যে সময় আপনি ঘুমোন, তার ঠিক ১৫ মিনিট আগে ঘুমনোর চেষ্টা করুন। এটা টানা কিছুদিন করলে ঘুমের সার্কলটা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। সকালেও একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন। যদি অন্যান্য রোগের কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে মেলাটনিন হরমোন ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ঘুমের আগে কখনওই ক্যাফেইনযুক্ত খাবার, অ্যালকোহল পান করবেন না।
‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’-এর সঙ্গে ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’র কোনও যোগ রয়েছে?
না, ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’র সঙ্গে ‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’-এর কোনও যোগ নেই। ‘ডিলেড স্লিপ ফেজ সিন্ড্রোম’ মূলত লাইফস্টাইলের জন্য হয়। যদি ঘুমের সার্কল বজায় রাখা যায়, তাহলে এই সমস্যা সহজেই দূর হয়ে যায়।