দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘন ঘন হাত ধোওয়ার মত বেসিক বিষয়গুলি মেনে চলা, স্বাস্থ্য়কর খাদ্যাভাস ও ফিটনেস রুটিন মেনে চলা সংক্রমণকের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
শরীর মজবুত ইমিউন সিস্টেম যে কোনও শক্তিশালী ও প্রভাবশালী সংক্রামক স্ট্রেন ওমিক্রনের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে ডায়েট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাড়িতে রান্না করা খাবার, ফাইবার ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার, সবুজ শাক-সবজি এবং ফলমূলের মতো মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
কিন্তু আপনি যদি কোভিডে আক্রান্ত হন, তাহলে দ্বিগুণ খেয়াল রাখতে হবে নিজের। এই সময় মাথা ব্যথা, সমগ্র শরীরে ব্যথা, ক্লান্তি, খিদের অভাব, কাশির মত একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এই সময় যত বেশি পুষ্টিকর খাবার খাবেন, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন।
সেন্ট জোসেফ হেলথের অটোইমিউন এবং রিউম্যাটিক ডিজিজ ইনস্টিটিউটের প্রধান চিকিৎসক বব এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি খাদ্যের কথা উল্লেখ করেছেন, যা কোভিড রোগীদের খাদ্যতালিকায় থাকা উচিত। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী-কী…
দই- ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দইকে পাতে রাখুন। দই এমন একটি খাবার যা আপনার পেটকে ভর্তি রাখতে সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি এতে প্রোটিন রয়েছে, যা এই অবস্থায় আপনাকে শক্তি জোগাবে। ডঃ বব দইয়ের সঙ্গে কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ কলার মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম।
ইলেক্ট্রোলাইট- ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়কে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেবেন না কখনও। এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মাত্রাকে বজায় রাখে এবং এর সঙ্গে আপনাকে শক্তি জোগায়। আপনি ইলেক্ট্রোলাইটের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফলের রস, ডাবের ফল ইত্যাদি পান করতে পারেন।
স্যুপ ও ব্রথ- ডঃ বব খাদ্যতালিকায় সবজি ও চিকেনের স্যুপকে অবশ্যই রাখতে বলছেন। চিকেনের ব্রথ এবং বিভিন্ন সবজির ব্রথ দিয়ে তৈরি স্যুপ শরীরে পুষ্টি জোগাবে। ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। অন্যদিকে শাক, সবজির মধ্যে থাকা পুষ্টি আপনাকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
প্রোটিন শেক- ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে হালকা খাবার খাওয়াই ভাল। এতে অ্যাসিডিটি, বদহজমের সমস্যাও এড়ানো যাবে। কিন্তু এই সময় শরীর দুর্বল থাকে তাই প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়াও জরুরি। আপনি স্বাদ বদলের জন্য প্রোটিন শেক খেতে পারেন। এতে দুধের পুষ্টিও পেয়ে যাবেন।
কপি জাতীয় শাকসবজি- এখন শীতের মরসুম। সহজেই বাজারে বাঁধাকপি, ফুলকপি এবং ব্রকোলির মত শাকসবজি পেয়ে যাবেন। এই খাবারগুলো এখন খাদ্যতালিকায় রাখুন। এতে আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন। ডঃ বব জানিয়েছেন এই সময়ে আপনি যত বেশি সবুজ শাকসবজি খাবেন, ততই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন।
ফল- ফলের মধ্যে এমন অনেক ভিটামিন রয়েছে যা আপনাকে এই সময় পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যেমন ভিটামিনের ওষুধ খাচ্ছেন, এর পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল রাখুন। এর জন্য কমলালেবু, মোসাম্বি লেবু, পেঁপে ইত্যাদি খেতে পারেন। অ্যান্টিবায়োটিক ক্যাপসুলের সঙ্গে এই সব খাবারগুলি আপনাকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় গবেষকরা, ‘ডেল্টাক্রন’ সম্বন্ধে যা কিছু জানা গেছে…