অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লার অকালমৃত্যু আমাদের নিজেদের হার্টের নানান অসুখ নিয়ে আবার নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। আমরা কি আমাদের হার্টের যত্ন নেওয়ার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করছি? আমাদের প্রতিদিনের জীবনের কোন অভ্যাসগুলো আমাদের হার্টে খারাপ প্রভাব ফেলছে? আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য খাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের খাদ্যাভ্যাসে ঠিক সময়ে পরিবর্তন আনতে পারলে আমারা মারাত্মক কোনও রোগের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারি।
সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ রুজুতা দিভেকার সম্প্রতি তাঁর ভিডিয়োতে বাড়িতে রান্না করা খাবার, ঘরোয়া খাওয়ার জিনিস এবং সিজনড ফলের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ ২০২১ উপলক্ষে, তিনি এই ভিডিয়োটি পোস্ট করেছিলেন।
এই ভিডিয়োতে, দিভেকারের দলের পুষ্টিবিদ জিনাল শাহ এমন সব খাবারের কথা বলেছেন যা হার্টের ভাল স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।
১) বাদাম: শাহ পরামর্শ দেন যে চিনাবাদাম, নারকেল, কাজু বাদাম হৃদরোগের জন্য চমৎকার ফল দিতে পারে। এছাড়াও এদের স্ন্যাক্সের বিকল্প হিসেবে খুব সহজেই খাওয়া যেতে পারে।
চিনাবাদাম: চিনাবাদামে হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে। এর ফলে এটা খারাপ এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষ সাহায্য করে। এই কারণেই চিনাবাদাম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। যাঁরা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে চান তাঁদের জন্য এগুলি সস্তা এবং স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকিং বিকল্প।
কাজুবাদাম: ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকায় এগুলো ঘুমের মান বাড়ায় এবং আপনাকে আরাম করতে সাহায্য করে। যখন আপনি ভালভাবে বিশ্রাম পান, আপনার হার্ট আরও ভাল ভাবে কাজ করতে সক্ষম হয়। যার ফলে, আপনার বিপি নিয়ন্ত্রিত হবে।
নারকেল: স্বাদে দারুণ এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর নারকেল শারীরিক শক্তির পাশাপাশি মানসিক শক্তি বাড়াতে দারুণ কাজ করে। হার্টের সমস্যা বা উচ্চ রক্তচাপের জন্য নারকেল খুবই ভাল। একে আপনি পোহাতে সাজাতে পারেন কিংবা নাড়ু করেও খেতে পারেন।
২) ঘি: ঘি ভাল ফ্যাটের একটি চমৎকার উৎস। আপনি যদি আপনার রুটিতে ঘি মেখে খান তবে আপনি মিষ্টি, চা, কফি কিংবা সিগারেটের জন্য বিশেষ আকৃষ্ট হবেন না। যা পক্ষান্তরে আপনার হার্টের জন্য খুবই ভাল। খাবারে ঘি গ্রহণ করলে অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।
৩) তাজা, স্থানীয় এবং সিজনড ফল: চিকু, কলা, কুমড়া এবং অন্যান্য সিজনড ফল হার্টের ভাল স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই খাওয়া উচিত। হার্টের স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক শক্তি উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় অসংখ্য মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের জন্য সিজনড ফল খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ফল খাওয়ার ভাল সময় হল সকালে কিংবা দুপুরের খাবার খাওয়ার পর। এছাড়া ব্যায়ামের আগে বা পরেও খাওয়া যেতে পারে।
৪) রান্নার সময় নুনের পরিমাণ: নুন আমাদের শত্রু নয়, প্যাকেটজাত খাবারগুলো আমাদের সবথেকে বড় শত্রু। চিপস, বিস্কুট, তথাকথিত লো-ফ্যাট এবং হাই-ফাইবার সমৃদ্ধ প্যাকেটের খাবারগুলিতে প্রিজারভেটিভ অনেক বেশি থাকে যা হার্টের জন্য খারাপ। অন্যদিকে স্বাভাবিক রান্নায় নুন থাকলে কোনও ক্ষতি নেই। যদি কেউ সবজিতে কম নুন দিয়ে খায়, তাহলে সে ঠিকভাবে স্বাদই পাবে না। শুধু আপনার স্যালাডে নুন ছিটিয়ে না দেওয়ার চেষ্টা করুন।
৫) ব্যায়াম: এই খাবারগুলি ছাড়াও, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম এবং প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম হৃদরোগ আর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: ক্যান্সারের মত রোগকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এই ফল!