জ্বর হয়নি, কিন্তু সারাক্ষণ বমি বমি ভাব , পেটে ব্যাথায় ভুগছেন? ওমিক্রম (Omicron varian) থেকে সুস্থ হয়ে উঠেও শরীরে নানারকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে? বিশেষজ্ঞদের কথায়, শ্বাসকষ্টের লক্ষণ (respiratory symptoms) বা জ্বর ছাড়াই যদি আপনার পেটের এই সমস্যা যদি দেখা যায়, তাহলে ওই কোভিড আক্রান্তের অবশ্যই পরীক্ষা করা উচিত। কোভিডের নয়া স্ট্রেন ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা নাও যেতে পারে। তবে পরিপাকতন্ত্রের উপর (abdominal complaints) দারুণভাবে প্রভাব ফেলতে পারে। ওমিক্রন দ্বারা সংক্রামিতদের মধ্যে পেটের লক্ষণগুলি সাধারণ হয়ে উঠেছে। এমনকি যাঁরা ভাইরাসের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করার জন্য টিকা গ্রহণ করেছেন, তাঁরাও এই নয়া উপসর্গের মুখোমুখি হচ্ছেন। করোনাভাইরাসের নয়া কিছু লক্ষণ দেখা দিয়েছে। তারমধ্যে বমি বমি ভাব, পেটে ব্যাথা, বমি হওয়া, ক্ষুধা হ্রাস হওয়া ও ডায়েরিয়া।
গুরুগ্রামের ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পালমোনোলজিস্ট তথা ডিরেক্টর ড মনোজ গোয়েল, লাইভমিন্ট সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিকভাবে কোনও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসছেন না। অধিকাংশের মধ্যে পেটের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। আর সেই লক্ষণগুলির মধ্যে পিঠে ব্যাথা, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ক্ষুধা হ্রাস ও ডায়েরিয়া। ওমিক্রন ভাইরাসের কারণে অন্ত্রের মধ্যে মিউকোসাকে দারুণভাবে সংক্রামিত করতে তোলার কারণে এই ধরণের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘যাঁরা ডবল টিকা নিয়েছেন তাঁদের মধ্যেও পেটের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আর এই সমস্যাগুলি প্রতিকূল নয়। আবার উদ্বেগের বিষয়ও নয়।’
‘স্বাভাবিক ফ্লু হিসেবে পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব ও ক্ষুধা হ্রাস হবে না। যদি এই লক্ষণগুলি দেখা যায় তাহলে নিজেকে সকলের থেকে আলাদা করে নিন। ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ না নিয়ে কোনও ওষুধ খাবেন না। তথাকথিত নিরাপদ আয়ুর্বেদিক চিকিত্সা-সহ স্ব-ঔষধ এড়িয়ে চলুন। ভাল খাবার ও হাইড্রেশন রাখতে চেষ্টা করুন। ঘন ঘন খাবার ও পানীয় খান। বাদাম খেতে পারেন এই সময়। স্বাস্থ্যকর ও হালকা খাবার খান। মশলাদার খাবার ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চতলুন। লক্ষণগুলি হালকা হলে উদ্বেগজনক না হতে পারে। ‘ এমনটাই জানিয়েছেন ড গোয়েল।
তিনি আরও বলেছেন, ‘আক্রান্তের যদি শ্বাসকষ্টের মত উপসর্গ বা জ্বর না হয়, কেবলমাত্র পেটের সমস্যা থাকে, তাহলে কোভিডের জন্য পরীক্ষা করা উচিত। কারণ ওমিক্রন সংক্রমণের কারণেই এমনটা হয়েছে বলে এখন মনে করা হচ্ছে।’
ওমিক্রন-ডেল্টা দুটোর প্রভাবই এখন দেখা যাচ্ছে। এই লক্ষণগুলি অনেকবেশি সাধারণ ও নিয়মিত সর্দি-কাশির মত দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের টিকা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে বেশি দেখা দিচ্ছে। সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে বমি বমি ভাব, পেশিতে ব্যথা, ডায়েরিয়া ও ত্বকে ফুসকুড়ি হলে আপনার স্থানীয় চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ নিতে পারেন।
ওমিক্রন কতটা খারাপ
এই নয়া ভেরিয়েন্টটি আগের ভেরিয়েন্টের তুলনায় অনেক বেশি সংক্রামক।যার ফলে কানাডা, ইউরোপ, ইউকে-সহ অন্যান্য দেশে এই ভাউরাস মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলেছে। যদিও এখনও এটা স্পষ্ট নয় যে আমরা এই রোগের কারণে হাসপাতালে ভর্তির একটি অপ্রতিরোধ্য তরঙ্গের মুখোমুখি হতে পারব কিনা। তবে এটি মনে রাখা উচিত যে ওমিক্রন এবং ডেল্টা আমাদের অনেকের কাছে ঠান্ডা লাগার মতো মনে হতে পারে। কিন্তু এটিকে এত গুরুত্বহীন ভাবাটাও ভুল। এই ভাইরাসের কারণে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। আবার দীর্ঘস্থায়ী উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে।