পুরুষদের স্বাস্থ্যের ওপর কুমড়োর বীজ কী ভূমিকা পালন করে জানেন?
১০০ গ্রাম কুমড়োর বীজের মধ্যে প্রায় ২৩.৩৩ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। কুমড়োর দানা পুরুষদের স্বাস্থ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
যখনই স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ আসে তখন আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিই। আমরা সব সময়ই চাই যাতে বাড়াবাড়ি হওয়ার আগে ঘরোয়া কোনও উপায়ের দ্বারা রোগ নির্মূল করা যায়। কিন্তু আমরা যদি প্রথম থেকে স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দিই, তাহলে এই ‘বাড়াবাড়ি’ হওয়ার সমস্যা কোনওদিনই আসবে না। আমরা অনেকেই কুমড়োর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানি। কিন্তু আপনি কি কুমড়োর দানার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন? কুমড়োর দানা পুরুষদের স্বাস্থ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ ইউরোলজিতে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, কুমড়োর বীজ প্রস্টেট স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি সাধারণত প্রস্টেট গ্রন্থিকে শক্তিশালী করতে এবং পুরুষদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর হরমোনের কাজ গুলিকে অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। কুমড়োর বীজ বেনাইং প্রোস্ট্যাটিক হাইপারপ্লাসিয়াকে (বিপিএইচ) সাহায্য করে। এটি এমন একটি অবস্থা যা বর্ধিত প্রস্টেট গ্রন্থির কারণে প্রস্রাবের সমস্যা সৃষ্টি করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত কুমড়োর বীজ খেলে এটি বিপিএইচ সম্পর্কিত উপসর্গগুলি হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। তার পাশাপাশি কুমড়োর বীজ পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
কুমড়োর বীজে জিঙ্ক উপলব্ধ থাকে যা থেকে পুরুষরা উপকৃত হতে পারেন। শুক্রাণুর গুণমান হ্রাস এবং এমনকি পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের পিছনে শরীরে জিঙ্কের পরিমাণ হ্রাস দায়ী হতে পারে। অন্যদিকে কুমড়োর বীজে উপলব্ধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান স্বাস্থ্যকর টেসটোস্টের মাত্রায় ওপরও ভূমিকা পালন করে।
কুমড়োর বীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ, যা পেশী নির্মাণ এবং পেশিকে উন্নত করার জন্য অপরিহার্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) পুষ্টি চার্ট অনুযায়ী ১০০ গ্রাম কুমড়োর বীজের মধ্যে প্রায় ২৩.৩৩ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। একটি সহজ প্রোটিন বুস্টের জন্য যে কোনও খাবার বা জলখাবারে কুমড়োর বীজকে যোগ করতে পারেন।
কুমড়োর বীজ প্রাকৃতিক তেল সমৃদ্ধ হলেও বেশি পরিমাণ কুমড়োর বীজ খেলেও আপনি মোটা হবেন না। আর যেহেতু কুমড়োর বীজ জিঙ্ক সমৃদ্ধ হয় তাই এগুলি কোষ পুনর্নবীকরণেও সহায়তা করে। তার সাথে এটি চুলের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এই বীজগুলির মধ্যে ফসফরাস রয়েছে যা মেটাবলিজমে সাহায্য করে। হজম ক্ষমতাকে উন্নত করতেও সাহায্য করে কুমড়োর বীজ।
কুমড়োর বীজ ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ হয়, যা শরীরে রক্ত চলাচলকে ঠিক রাখে। যার ফলে হৃদজনিত রজার সমস্যা হ্রাস পায়। এই বীজের মধ্যে প্রদাহবিরোধী উপাদানও রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাছাড়া কুমড়োর বীজ ডিপ্রেশন কমায় এবং মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে। যাদের ঘুমের অসুবিধা রয়েছে বা সঠিক পরিমাণে ঘুম হয় না তারা কুমড়োর বীজ খেতে পারেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কুমড়োর বীজ ঘুমকে উন্নত করতে সাহায্য করে। সুতরাং সুস্থ থাকতে আজই কুমড়োর বীজ খাওয়া শুরু করুন।
আরও পড়ুন: ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর মধ্যে পার্থক্য কোথায় জানেন?