দু-দু’বার ক্যানসারকে হারিয়ে জিতে ফিরে এসেছেন তিনি। প্রতিশ্রুতি মতো শুরু করেছিলেন কাজও। হঠাৎ করেই মঙ্গলবার রাতে ব্রেন স্ট্রোক হয় তাঁর। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে ভর্তি করা হয় হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী। তবি ক্লিনিক্যালি তিনি স্টেবল আছেন। অর্থাৎ আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকলেও তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন। যদিও কানাঘুঁষো শোনা যাচ্ছিল তিনি ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। তবুও এমন খবরে এখনও কোনও রকম মান্যতা পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়বার ক্যানসারকে হারিয়ে ফিরে আসার পর এমন প্রাণোচ্ছ্বল মেয়েটির এমন অবস্থায় চমকে উঠেছেন সকলে। একটাই প্রার্থনা, অভিনেত্রী যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন। স্ট্রোক হঠাৎ করেই আসে। আর তাই যে সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন-
স্ট্রোক মানেই সব সময় হৃদরোগ কারণ নয়। স্ট্রোকের আসল কারণ হল মস্তিষ্ক। আর কোনও কারণে যদি মস্তিষ্কের রক্তজালি ছিঁড়ে যায় বা মস্তিষ্কে রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সেখান থেকে স্ট্রোকের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এইবারে হঠাৎ করেই ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেত্রী। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলেই এই স্ট্রোক হয়। এই স্ট্রোকে আচমকা রক্তনালী ছিঁড়ে মস্তিষ্কে রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
স্ট্রোকের পূর্বলক্ষণ
কোনও কারণ ছাড়াই শরীর খারাপ লাগা, প্রায়শই শরীর দুর্বল লাগা, মাথাব্যথা, মাথা ভার লাগা চোখে ব্যথা, পা অসাড় হয়ে যাওয়া এই সমস্ত হল স্ট্রোকের পূর্বলক্ষণ। আর তাই এমন সমস্যা হলে আগে থেকেই সাবধান হতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
কিছুজনের ক্ষেত্রে এই স্ট্রোক হল জিনগত। পারিবারিক ইতিহাসে স্ট্রোক থাকলে আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত। এছাড়াও হাই ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা থাকলে সতর্ক হন।
হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা, হাতের জোর কমে যাওয়া, কথা জড়িয়ে গেলে, কথা বুঝতে সমস্যা হলে বা নিজের কথা বুঝিয়ে না বলতে পারাটাও স্ট্রোকের লক্ষণ। হঠাৎ করেই দৃষ্টিশক্তি যদি ঝাপসা হয়ে যায় তাহলে ফেলে না রেখে চিকিৎসকের কাছে যান। নইলে পরিস্থিতি আরও অনেক বেশি জটিল হতে পারে।
আর তাই কোনও ব্যক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে প্রথমে এফএএসটি (FAST) বলে একটি পরীক্ষা করা হয়। যার প্রতিটি অক্ষরের বিশেষ একটি অর্থ রয়েছে।
ফেসিয়াল ড্রুপিং: হঠাৎ মুখ বেঁকে যাওয়া স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। সাধারণত মুখের একদিকের চামড়া ঝুলে যায়। অসাড় হয়ে যায়। একদিক কোনও কাজই করে না। মুখের মধ্যে জল দিলেও তা গড়িয়ে পড়ে যায়। কথায় জড়তা থাকে। কথা বলতেও তখন সমস্যা হয়।
হাত নাড়াতে না পারা: হঠাৎ করেই যদি একটি হাত অবশ হয়ে যায় বা হাত নাড়াতে না পারে তাহলে তাও হল স্ট্রোকের লক্ষণ। এক দিকের হাত অন্যদিকের হাতের তুলনায় কমজোরি থাকে। একই সঙ্গে দুই হাত তোলাও তখন সম্ভব হয় না।
কথা আটকে যাওয়া- স্ট্রোক হলে কথা আটকে যায়। জড়িয়ে যায়। কোনও কথা স্পষ্ট করে বলতে পারেন না সেই ব্যক্তি। কিছু বোঝাতে চাইলেও তা বোঝানো সম্ভব হয় না। বাক্য গঠনে সমস্যা হয়। এই লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকেরা আগাম সতর্ক করে দেন।
সময়- এক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি হল সময়। যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা যায় ততই মঙ্গল। যদি মনে হয় যে রোগীর পা অসাড় হয়ে যাচ্ছে কিংবা চোখে দেখতে সমস্যা হচ্ছে হঠাৎ করে তাহলে আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা নয়।