বিরাট কোহলি। নামটাই যথেষ্ট। ভারত তো নয়ই, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিরাটের অধিনায়কত্ব বেশ ঈর্ষান্বিত। একজন সফল ও অসাধারণ ক্রিকেটার ও ভারতের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হওয়ার জন্য যে যোগ্যতা থাকতে হয়, তার উদারণ হিসেবে বিরাট কোহলির চেয়ে আর ভাল কিছু হয় না। আন্তার্জাতিক মানের সেরা ব্যাটসম্যান ও মাঠের বাইরে একটি সুশৃঙ্খল ক্রীড়াবিদ হিসেবে পরিচিত বিরাট কোহলি বারবার ফিটনেস গোল নিয়ে কথা বলেছেন। ছোলা ভাটুরে থেকে শুদ্ধ নিরামিষ খাদ্যে পরিবর্তন আনা, বিরাট কোহলির বিস্ময়কর ওজন কমানো সব কিন্তু একদিনে ঘটেনি। বরাবর ডায়েট ও ওয়ার্ক আউট করে ফিট থাকার মন্ত্র দীক্ষিত হোননি তিনি। বরং আর পাঁচটা ভারতীয়ের মতোই আলুর পরোটা, বাটার চিকেন, ছোলা ভাটুরে ও মিষ্টি না খেলে প্রতিদিনের খাবার হজম হতো না। বলতে গেলে একপ্রকার ভোজনরসিক ছিলেম। কিন্তু খেলার মাঠে তৃপ্তি পেতে বর্জন করেছেন পছন্দের সব খাবার।বদলে গিয়েছে খাদ্যাভাস। ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে তাঁর ডায়েট ও ফিটনেস নিয়ে নিজেই নিজের সিক্রেট ফাঁস করেছেন বিরাট।
কীভাবে নিজেকে এত ফিট তৈরি করলেন?
আসলে প্রথম বিশ্বকাপের পরই তিনি ফিটনেসকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেন। বিরাট কোহলির মতে, আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য ফিটনেশ ছিল প্রথম লক্ষ্য়। তাই নিজেকে তৈরি করতে আর পিছনের দিকে তাকাননি। নিজেকে সেই জায়গায়. নিয়ে যেতে প্রচুর পরিশ্রম ছিল বিরাটের গোপন রহস্য। একটি সাক্ষাত্কারে সময় কোহলি জানিয়েছিলেন, ২০ বছর বয়সে কঠোর শরীরচর্চা করার শপথ নিয়েছিলেন। কারণ তিনি জানতেন ২০ বছর বয়সে যে অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে যাবেন, সেটাই ৩০ বছর বয়সে গিয়ে ফিট ও সুস্থ থাকতে পারবেন। ৩৪-৩৫ বছর বয়সেও আমি ক্রিকেট খেলতে সক্ষম হতে চাই। কারণ সকলেই জানেন, এইজন্যই আমি এমন প্রশিক্ষণ নিয়েছি, যাতে খেলা থেকে কখনও আলাদা না থাকতে পারি।
একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলির দৈনন্দিন ডায়েটে থাকে প্রচুর শাক-সবজি। কারণ শাক-শবজিতে শরীরে সব ভারসাম্য বজায় রাখে। এছাড়া প্রোটিনের পাশাপাশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পানীয়ও পান করেন তিনি। তারমধ্যে মুসুর ডাল ও কফি হল অন্যতম।
সকালের ব্রেকফাস্ট কী দিয়ে শুরু করেন?কোহলি একবার নিজেই জানিয়েছিলেন, গোলমরিচ দিয়ে ডিম, একটি সবজির পদ খেতে পছন্দ করেন। নন-ভেজ থেকে পুরোপুরি ভেজিটেরিয়ান হয়ে যাওয়ার আগে, কোহলি দৈনন্দিন খাবারে পুষ্টি যোগ করার জন্য চিকেম ও স্যামন খাওয়া পছন্দ করতেন। এনার্জির জন্য বিরাট বাদাম, সিডস সবসময় হাতের কাছে রাখেন। গ্লুটেন-ফ্রি রুটি ও মিষ্টি পছন্দ করেন। পেশাশক্তি বৃদ্ধির জন্য রাতের খাবারে প্রোটিন-জাতীয় খাবার থাকে। কুইনো, ধোসা, ডাল, পালং শাক এইসবই থাকে তাঁর পাতে। এছাড়া বাদাম, বাটার, সবজির ঝোল, স্মুদি, সোয়া ও প্রোটিন শেক খেতে পছন্দ করেন। তবে সব নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে। ভ্রমণের সময় নিজের খাবার বহন করতে পছন্দ করেন। আর এটাই তাঁর ডায়েটের গোপন রহস্য।
বিরাট কোহলি যে সম্পূর্ণ নিরামষভোজী তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। ডায়েটর পাশাপাশি প্রথম দিন থেকেই তিনি শরীরচর্চার দিকে মন দিয়েছিলেন। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, হোম-ফুড ডায়েট অনুসরণ করেন তিনিয দিনে প্রায় ৩-৪ কাপ গ্রিন টি ও লেবু চা খেয়ে থাকেন। তাতে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে ও বিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। ফিট থাকতে বিরাটে যা যা করেন, তা যে কোনও ফিটনেস উত্সাহীদের জন্য স্বপ্ন তো বটেই, টিপসও বটে। ডেডলিফ্ট থেকে কার্ডিও , কোনও কিছুই বাদ দেন না এই ৩২ বছর বয়সি সবকিছুই করেন। দেশের অ্যতম ফিট ক্রীড়াবিদ হিসেবে নিজেকে ফিট রাখতে ৫-৬ দিনের একটি ওয়ার্কআউট প্ল্যান অনুসরণ করেন তিনি। সপ্তাহে একটি দিন বিশ্রামের জন্য রেখে দেন। ওয়ার্ক আউটে কার্ডিও, ও ওজন স্বাভাবিক রাখার ওয়ার্ক আউট করে থাকেন। পেশী শক্তিশালী করতে, স্ট্যামিনা বাড়াতে ও টোনড করতে ওয়ার্কআউটই সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: Obesity: অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে মাত্র ৪টি এলাচই যথেষ্ট! কখন কীভাবে খাবেন, জানুন…