বিশ্বজুড়ে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ বর্তমানে ভুগছেন উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যায়। সমস্যা হল অধিকাংশ মানুষই জানেন না যে তাঁদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। এর কারণ নিয়মিত প্রেসার না মাপা। যদি মানুষ সঠিক চিকিৎসা পায় তাহলে ২০২৩ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে অন্তত ৭ কোটি মানুষের মৃত্যু এড়ানো যেতে পারে। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেই রিপোর্টে WHO-বলেছে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে ভারতের প্রায় ২৭ টি রাজ্যে প্রায় ৫১ লক্ষ মানুষের উচ্চরক্তচাপ জনিত চিকিৎসা চলছে। সেই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে ৩০-৭৯ বছর বয়সীদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপের সমস্যা সবচাইতে বেশি। এর মধ্যে মাত্র ৫৪ শতাংশের ক্ষেত্রে তা নির্ধারিত হয়। ৪২ শতাংশ এর মধ্যে নিয়মিত ভাবে চিকিৎসা করাচ্ছেন আর মাত্র ২১ শতাংশের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর দিনটি বিশ্ব হার্ট দিবস হিসেবে পালন করা হয়। মানুষকে হৃদরোগ সম্পর্কে সচেতন করাটাই এই দিনের মুখ্য উদ্দেশ্য।
উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক লক্ষণ
যদি রক্তচাপ বেড়ে যায় তাহলে বুকে ব্যথা, অস্বস্তি, চাপ লাগা, দম নিতে অসুবিধে এমন নানা সমস্যা লেগেই থাকে। এছাড়াও মাথাব্যথা হয়, বিশেষত তালুতে। উচ্চরক্তচাপ যাঁদের রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হবেই। কিছুতেই মাথা ধরা যেন ছাড়তে চায় না। একই সঙ্গে মাথা ঘোরা, মাথা ভারী হয়ে থাকা এই সব সমস্যাও হয়ে থাকে। কিছুক্ষেত্রে রক্তচাপ বাড়লে দৃষ্টিশক্তিও দুর্বল হয়ে যায়। সঙ্গে ক্রমাগত শুকনো কাশি, ক্লান্তি লেগেই থাকে। আর তাই এমন সমস্যা হলে অবশ্যই একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। দীর্ঘ সময় মাথা ধরে থাকা মোটেই কাজের কথা নয়। যদি চিকিৎসক ওষুধ দেন তাহলে অবশ্যই তা নিয়ম করে খেতে হবে। তবে কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললে এই সমস্যার সমাধান হবে এবং নিজেও সুস্থ থাকবেন। পাশাপাশি নিজেকেও কিন্তু অনেক বেশি সজাগ থাকতে হবে।
রোজকার রুটিনে পরিবর্তন আনুন। উচ্চরক্তচাপের কারণ হল আমাদের জীবনযাত্রা। জীবনে চাপ এখন এতই বেশি যে ঠিক করে বিশ্রাম নেবার বা ঘুমের সময় সকলের হাতে থাকে না। আর এখান থেকেই বাকি সমস্যা আসে। রোজ নিয়ম মেনে ব্যায়াম করুন। ঘাম ঝরিয়ে ১ ঘন্টা শরীরচর্চা করতেই হবে। হাঁটতে যান, সাঁতার কাটুন, সাইকেল চালান কিংবা জিমে ১ ঘন্টা সময় কাটান। যোগব্যায়াম অবশ্যই ভাল তবে শরীরচর্চার পাশাপাশি তা করতে হবে। শুধু যোগব্যায়ামে কোনও রকম কাজ হয় না।
স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। তেল, মশলা, মিষ্টি, অ্যালকোহল এসব একদম বাদ রাখুন। রাত জেগে চিপস, অ্যালকোহল এসব একদম চলবে না। ঘরোয়া খাবার বান। বাইরের ভাজাভুজি একদম বাদ দিন। সপ্তাহে একদিন বা পনেরো দিনে একবার চলতে পারে। একমাস চিনি আর বাইরের খাবার বন্ধ করে দেখুন ওজন এমনিই কমতে শুরু করবে। রোজ একটা করে ফল, ডিমসেদ্ধ, সবজি, ডাল এসব রাখুন ডায়েটে।
রোজ রসুন খান। রসুনে রয়েছে সালফার, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তুলসি পাতা দিয়ে চা খান, এতেও রক্তচাপ কমে। এছাড়াও ফাইবার রয়েছে এমন সবজি খান। রোজ সকালে ইষদুষ্ণ জলে সামান্য লেবু মিশিয়ে খেলেও রক্তচাপ কমে যায়