যকৃতে দীর্ঘদিনের প্রদাহ থেকেই গ্যাস্ট্রিকের ( Gastric Problem)মতো সমস্যার সূত্রপাত হয়। তবে যদি দীর্ঘদিন ধরে তার কোনও চিকিৎসা (Gastric Treatment) শুরু না হয় সেখান থেকে কিন্তু ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে। গ্যাস্ট্রিক হলে প্রথমেই যে সব লক্ষণ ধরা পড়ে এমনটা নয়। হেলিকোব্যাকটর ফাইলোরি (Helicobacter pylori) নামক এক ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবেই গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যার সূত্রপাত হয়। এছাড়াও নিয়মিত ভাবে অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, তেল-মশলা অতিরিক্ত খাওয়া, বাইরের খাবার বেশি খাওয়া সেখান থেকেও কিন্তু আসে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকতে থাকতে অনেকেই এই সমস্যার শিকার হন। কর্মসূত্রে অনেককেই বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। আর একটানা বাইরের খাবার খেলে কিন্তু সেখান থেকেও আসতে পারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।
অনেক সময় ফুড অ্যালার্জি থেক্ও কিন্তু আসে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। এছাড়াও যাঁরা নিয়মিত মদ্যপান করেন, যাঁদের অ্যাসিডিটির সমস্যা রয়েছে, মানসিক কোনও সমস্যা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রেও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। তবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মোটেই উপেক্ষা করবেন না। হতে পারে তা ক্যানসারের লক্ষণ। আর এই ক্যানসার যে শুধুমাত্র পেটেই সীমাবদ্ধ থাকে তা নয়। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে লিভার, ফুসফুস ও হাড়ে। যে কারণে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না পড়লে পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে চলে যায়।
গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে পেটের ভিতরের কোষে শ্লেষ্মা তৈরি করে। যা পরবর্তী কালে ঘায়ে পরিণত হয়। পাকতন্ত্রে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা দেয়। এটি কার্সিনয়েড টিউমার, গ্যাসট্রিক সারকোমা ও লিম্ফোমাস হয়ে প্রকাশ্যে আসে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ২৮ হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। এঁদের মধ্যে ৬০ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তির বয়সই ৬৫-র ঊর্ধ্বে। আবার মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। ১৯৩০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল এটি। কিন্তু বর্তমানে ক্যান্সারের তালিকায় ১৪তম স্থান দখল করেছে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার।
গবেষকদের মতে, রেফ্রিজারেটারে সংরক্ষিত ফল ও শাক-সবজি, ধূমপান, অতিরিক্ত নোনতা খাবারই এই সমস্যার জন্য দায়ী। হেলিকোব্যাকটর ফাইলোরি নামক এক ব্যাক্টিরিয়া পেটে আলসার বা প্রদাহের অন্যতম কারণ। এই ব্যাক্টিরিয়াই আবার গ্যাসট্রিক ক্যান্সারের জন্য দায়ী। আজকাল জীবনযাত্রাতেই অনেক বেশি পরিবর্তন এসেছে। স্ট্রেস জীবনের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। অনেকেরই খাওয়া-ঘুমের নির্দিষ্ট কোনও রুটিন নেই। সেই সঙ্গে ফাইবার জাতীয় খাবার পরিমাণে অনেকটাই কম খাওয়া হয়। যা কিন্তু গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে বংশগত কারণেও কোনও ব্যক্তি এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি পেটে অস্ত্রোপচার হলেও গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশি। শুধু তাই নয়, রক্তাল্পতা, কোলনের ও হজমে সমস্যা থাকলে এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত মাছ-মাংস, মদ্যপান বাড়িয়ে দেয় এই ক্যানসারের ঝুঁকি। ক্লান্তি, অল্প খাবারেই পেট ভরে যাওয়া, খেতে ইচ্ছে না করা, হজমে সমস্যা, প্রায়শই ডায়ারিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিড, পেটে ব্যথা, কারণ ছাড়াই অতিরিকিক্ত ওজন কমে যাওয়া এসবই কিন্তু গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের লক্ষণ। উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।