নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই আমরা কত রকমের রেজ়োলিউশন নিয়ে থাকি। আর এর মধ্যে সবচাইতে যে বিষয় নিয়ে মানুষ সজাগ থাকেন তা হল ওজন কমানো। প্রথম ১০ দিন বেশ সবকিছু চলতে থাকে। তারপর সেই এক রুটিন। ৬০-৭০ শতাংশ সেই রেজো়লিউশন মেনে চলার চেষ্টা করেন কিন্তু কোনও ভাবেই তা যেন আর হয়ে ওঠে না। তবে যে রেজো়লিউশন আপনি নিয়েছেন তা মেনে চলতে প্রাণপন চেষ্টা করছেন। সমস্যাটা শুরু হয় এখানেই। অধিকাংশই প্রথমে চেষ্টা করেন ১০০ শতাংশ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখতে। ওজন কমাতে গিয়ে তখন দেখা যায় যে ওজন বেড়ে যাচ্ছে। আজকাল অধিকাংশই অতিরিক্ত ওজন জনিত সমস্যায় ভুগছেন। ওজন বাড়লে সেখান থেকে আসে একাধিক সমস্যা।
এবার ওজন কমাতে চাইলে প্রথমেই সকলে ১০ কেজি, ১৫ কেজির টার্গেট নেন। ৩-৪ মাসে কমপক্ষে ১৫ কেজি ওজন কমিয়ে আনবেন এমন প্রতিজ্ঞাই থাকে। প্রথম ৭ দিন খুব কষ্টকরে ডায়েট মেনে চলে। এর পর শুরু হয় এক্সসারসাইজও। কিন্তু ১৫ দিন কোনও ভাবে কাটানোর পর সকলে মুখ থুবড়ে পড়েন। ৩-৪ দিন সঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠার পর পঞ্চম দিনে মনে হয় আজ একটু ঘুমিয়ে নিই। আবার অনেকের ডায়েট প্রথম ১৫ দিনে একেবারে তুঙ্গে পৌঁচ্ছে যায়। এভাবে ডায়েট আর এক্সসারসাইজ করার পরও বিশেষ কোনও ফারাক তিনি দেখতে পাননি। কয়েক মাস পর ওজন মাপতে গিয়ে দেখলেন ৮১ থেকে তিনি ৯০-তে পৌঁচ্ছে গিয়েছেন। আবার ওজনের কাঁটা দেখে ভয়ানক ডিপ্রেশনে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে একগুচ্ছ মোটিভেশন সংগ্রহ করলেন। আবার কয়েক মাস পর ওজন মাপতে গিয়ে দেখা গেল আরও ৫ কেজি ওজন বেড়ে গিয়েছে।
সব কিছুতে ক্ষান্ত দিয়ে এবার গেলেন চিকিৎসকের কাছে। সেখানে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করতেই দেখা গেল সুগার, কোলেস্টেরল, রক্তচাপ সবই অস্বাভাবিক হারে বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে মানসিক চাপ অত্যন্ত বেশি। সব সময় মনে হচ্ছে আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি, অস্বাভাবুক হারে ওজন বাড়ছে কিন্তু কোনও ভাবেই আটকাতে পারছি না। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা সব সময় বলছেন প্রথমেই কোনও একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলতে। এরপর একজন পুষ্টিবিদের সাহায্য নিন। একমাত্র তিনিই পারবে আপনাকে সঠিক পথ দেখাতে। ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শে খাবার খেলে ২ মাসে ৬ কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে পারবেন।
এভাবেই শুরু করুন আপনার ওয়েট লস জার্নি। কাউকে দেখে নয়, নিজে সুস্থ থাকতেই ওজন কমানো জরুরি। আগে মনকে প্রস্তুত করুন যে ওজন আপনাকে কমাতেই হবে। এবার সেই মত লক্ষ্যে এগোতে থাকুন। মানসিক শান্তি না থাকলে ওজন কোনও ভাবেই কমবে না।