শীতকাল এলেই কাজ করার অনীহা তৈরি হয়? ল্যাদ চলে আসে। তার সঙ্গে ঘিরে ধরে মন খারাপ। বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে যায় না। এই ধরনের সমস্যা সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজর্ডার নামে পরিচিত। সহজ ভাষায় বললে একে ‘উইন্টার ব্লুজ’ বলা হয়। এটা এক ধরনের ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ। সাধারণত শীতকালে এই সমস্যা দেখা দেয় এবং বসন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত বিষণ্ণতা পিছু ছাড়ে না। এই সময় রোদের তেজ কম থাকে। মূলত সূর্যালোকের অভাবের কারণেই এই সমস্যা দেখা দেয়।
শীতকাল অনেকের কাছে প্রিয়। আবার অনেকের কাছে এই ঋতুই চরম বিরক্তির কারণে। ঠিক কোনও কারণ উদ্বেগ বাড়তে থাকে, সেটাও বোঝা যায় না। কিন্তু কোনওভাবেই মানসিক অবসাদ কমে না। শীতকালে আপনি যে ‘উইন্টার ব্লুজ’-এ আক্রান্ত হন, তা বোঝার বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। মন-মেজাজ খারাপ হয়ে থাকা। যে কাজ আপনি করতে ভালবাসেন, তার প্রতি আগ্রহ হারানো। ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যা, মানুষের সঙ্গে মেলামেশা কমিয়ে দেওয়ার মতো উপসর্গগুলোই ‘উইন্টার ব্লুজ’।
শীতকালে এই সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজর্ডার থেকে বেরোতে গেলে আপনাকে শরীরচর্চা করতে হবে। এটি এনার্জি লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দিনের বেশ কিছুটা সময় রোদের মধ্যে কাটাতে হবে। তার সঙ্গে দরকার দেহে বিশ্রাম। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম দরকার। এছাড়া আপনি ডায়েটের মাধ্যমে ‘উইন্টার ব্লুজ’-এর উপসর্গ কমিয়ে ফেলতে পারেন।
ডায়েটের মাধ্যমে যেভাবে ‘উইন্টার ব্লুজ’-এর সঙ্গে লড়াই করবেন-
১) যেসব খাবারে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, সেগুলো বেশি করে খান। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার দেহে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং মেজাজকে উন্নত করতে সাহায্য করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে আপনি সামুদ্রিক মাছ, আখরোট, ফ্ল্যাক্স সিড খেতে পারেন।
২) মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে এবং মেজাজকে ভাল রাখতে ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার খান। ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার আপনাকে ‘উইন্টার ব্লুজ’-এর সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। এর জন্য আপনি ডাল, শাকসবজি, গোটা শস্য ও বাদাম খেতে পারেন।
৩) শীতকালে রোদ কম থাকায় ‘উইন্টার ব্লুজ’-এর সমস্যা জোরাল হয়। অন্যদিকে সূর্যালোকের অভাবে দেহে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি তৈরি হয়। মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং ঘুমের চক্র ঠিক রাখতে গেলে এই ভিটামিন অপরিহার্য। তাই ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ফ্যাটি ফিশ, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য রোজ খান।