সারা দিন ধরে কম-বেশি কাজের চাপ থাকে সকলেরই। তবু দিনের শেষে প্রিয় মানুষটা পাশে থাকলে মনে হয় একটু হলেও শান্ত হল মাথাটা। শিথিল হল মানসিক চাপ। কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টা একটু অন্যরকমভাবেই কাজ করে। আলিঙ্গন করলে মহিলাদের মধ্যে মানসিক চাপ কমে। এক্ষেত্রে আলিঙ্গন বলতে মূলত সঙ্গী বা ‘পার্টনার’কে বোঝানো হয়েছে। অন্তত এমনটাই দাবি করছে গবেষণা। যদিও এই প্রভাব পুরুষদের মধ্যে দেখা যায়নি।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বডি ম্যাসাজ, হাত ধরার ও জড়িয়ে ধরা এবং স্নেহপূর্ণ কমিউনিকেশন মহিলাদের মধ্যে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। জার্মানির বোকামের রুহর ইউনিভার্সিটির Gesa Berretz এবং সহকর্মীরা তাঁদের এই ফলাফলগুলো PLOS ONE নামের ওপেন-অ্যাক্সেস জার্নালে উপস্থাপন করেছে।
Gesa Berretz ৭৬ জনের মধ্যে একটি গবেষণা করেছিল। যেখানে দেখা গিয়েছে, আলিঙ্গন করলে মহিলাদের মধ্যে মানসিক চাপ কমে। এই একই গবেষণা পুরুষদের মধ্যেও করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের মধ্যে এমন কোনও প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। গবেষকরা এই পরীক্ষা শুরু করার আগে এবং পরে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সালিভারি কর্টিসলের মাত্রা-সহ মানসিক চাপের বিভিন্ন সূচকগুলো পরিমাপ করেছিল।
পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, যে সব মহিলারা আলিঙ্গন করেননি, তাঁদের তুলনায় যে সব মহিলারা তাঁদের সঙ্গীকে আলিঙ্গন করেছিলেন, তাঁদের ‘স্ট্রেস লেভেল’ অনেকটা কমে গিয়েছে। অন্যদিকে, পুরুষদের মধ্যে একই পরীক্ষা করার পরও তাঁদের ‘স্ট্রেস লেভেল’-এ কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি।
কিন্তু সঙ্গীকে আলিঙ্গনের সঙ্গে রক্তচাপ এবং মানসিক অবস্থার পরিবর্তন-সহ স্ট্রেসের অন্যান্য পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি। এই গবেষণার ফলাফল এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, মহিলারা মানসিক চাপ কমাতে কিংবা চাপযুক্ত কোনও সামাজিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার জন্য সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরতে পারেন।
কিন্তু যে সব সঙ্গীদের মধ্যে কোনও দৈহিক সম্পর্ক নেই (অর্থাৎ প্লেটোনিক লাভ-এর ক্ষেত্রে), সেখানে আলিঙ্গন করলে মহিলাদের মধ্যে এমন কোনও প্রভাব পড়বে কি না, সে নিয়ে এখনও কোনও গবেষণা হয়নি। সুতরাং এমন কোনও বন্ধু বা প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরলেই যে মহিলাদের মানসিক চাপ শিথিল হবে, তার সপক্ষে কোনও যুক্তি আপাতত নেই। তবে গবেষকদের মতে, একজন মহিলা হিসেবে সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরার মাধ্যমে আপনি শরীরের তীব্র চাপ বা তার প্রতিক্রিয়াকে প্রতিরোধ করতে পারেন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।