করোনা অতিমারি জেরে মানুষ কিছুটা হলেও প্রকৃতির গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হয়েছে। প্রতিবছর ৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day) পালিত হয়। এবারেও তা অন্যথা হয়নি। পরিবেশ রক্ষার সচেতনতা এবং নতুন পদক্ষেপকে উৎসাহিত করতে জাতিসংঘ পালন করে।
২০২১ সালে, বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম হল, বাস্তুতন্ত্রের পুনরুদ্ধার করা (Ecosystem Restoration)। বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে অতীতের সব পাপ মুছে ফেলা সহজ নয়। তবে আগামীদিনগুলি যাতে ফের কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে না হয়, তার জন্য শহর, বাড়ির চারপাশে গাছ লাগিয়ে সবুজ করতে পারি।
জাতিসংঘের পরিবেশ বাঁচানোর লড়াইয়ে বাস্তুতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া জারি রাখার কথা বলা হয়েছে। কারণ, এই বাস্তুতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করলেই গাছপালা, জীবজন্তু, প্রাণী, ও অন্যান্য পশুরা প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে একত্রিতভাবে বেঁচে থাকতে পারবে। সাম্প্রতিক অতীতে, পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রকে ধবংস করে যে কঠিন সময়ে আমরা জীবন-মরণের যুদ্ধ করে চলেছি, তা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়।
আরও পড়ুন: দীর্ঘায়ু হতে রোজকার ডায়েটে রাখুন ২ ফল আর ৩ ধরনের সবজি!
বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস ও মহামারি উত্থানের জেরে ইন্টারন্যাশানাল ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট ও সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড টেকনোলজির (আইফোরস্ট) সিইও চন্দ্রভূষণ এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন।মানুষের স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তাঁর কথায়, প্রতিনিয়ত পরিবেশ ধবংসের কারণে জীবজন্তু থেকে মানুষের মধ্যে অজানা অদ্ভূত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। করোনাভাইরাস মহামারির পিছনেও রয়েছে বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের নির্মম অত্যাচারের ঘটনা। জীববৈচিত্র্যের মধ্যে সামঞ্জস্যহীন হলে পরিবেশ আরও বেশি ক্ষয়িষ্ণু হয়েযায়। ফলে এই করোনাভাইরাসই শেষ অতিমারি নয়,পরবর্তীকালে আরও মহামারী হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
জলবায়ু ও অজানা রোগের মধ্যে সম্পর্ক
হিমবাহ দ্রুত গলে যাওয়া, পৃথিবী থেকে সবুজে অংশ হ্রাস পাওয়া, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, উষ্ণায়ন-সব কিছুই জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলাফল।এ প্রসঙ্গে চন্দ্র ভূষণ জানিয়েছেন, পরিবেশকে নির্মমবাবে ধ্বংস করতে থাকলে, হিমালয়ের শীর্ষে পৌঁছেও ম্যালেরিয়ার মতো রোগের প্রকোপ বাড়বে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মশার বৃদ্ধি ঘটে। একইভাবে অনুজীব, নানা অজানা রোগসৃষ্টিকারী ভাইরাসের প্রসার ঘটবে, েখানে আগে সেই ভাইরাসের কোনও নমুনাই পাওয়া যায়নি। পরিবেশ দ্রুত গরম হয়ে চলেছে। যার কারণে অতিরিক্ত গরমেও ভাইরাসগুলি ভোল পাল্টে টিকে থাকার লড়াইয়ে জিতে যাচ্ছে। সেইগুলিই মানবদেহে হামলা চালিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। সারা বিশ্বব্যাপী মহামারীর রূপ দেখতে বাধ্য হচ্ছে।