নয়া দিল্লি: তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার অপেক্ষা নয়, তার আগেই দেশে ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু করা হবে। বৃহস্পতিবার একটি সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন টিকার উপর জাতীয় বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান ডঃ এনকে অরোরা। জাইডাস ক্যাডিলার হাত ধরেই আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হবে এই টিকাকরণ।
চলতি মাসের প্রথম দিনই জাইডাস ক্যাডিলা সংস্থার তরফে জানানো হয়, তাদের টিকা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের জন্য ডিসিজিআই-র কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। অনুমতি মিললে বছরে ১২ কোটি টিকা প্রস্তুত করা হবে। সেই সময়ই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, দেশে মোট ২৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদের উপর পরীক্ষামূলক ট্রায়াল চালানো হয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার জন ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীও ছিল। প্রতিটি বয়সসীমার ক্ষেত্রেই ভাল ফল দেখিয়েছে এই ভ্যাকসিন। সুতরাং সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে শিশুদের টিকাকরণও শুরু করা যেতে পারে এই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে।
সেই কথাতেই সম্মতি জানিয়ে জাতীয় বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান ডঃ এনকে অরোরাও জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়ে যাবে জাইডাস ক্যাডিলা। তাদের ভ্যাকসিন দিয়েই সেপ্টেম্বর মাস থেকেই শিশুদের টিকাকরণ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে একা জাইডাসই নয়, দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি কোভ্যাক্সিনের টিকাও শিশুদের দেওয়া হবে। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “শিশুদের উপর কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষভাগের মধ্যে টিকাকরণ শুরু করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি বছরের তৃতীয় ভাগে বা আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদেরও টিকাকরণ শুরু করা যাবে মনে করা হচ্ছে।”
শিশুদের উপর জাইডাসের করোনা টিকা প্রয়োগের আগেই তাদের ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করা হবে। সেপ্টেম্বরের শেষভাগের মধ্যে যাবতীয় তথ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া হবে। করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে ব্যাপক প্রভাব পড়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে ডঃ অরোরা জানান, কেবল সংক্রমণের ভয়েই স্কুল খোলা হয়নি এখনও। তবে নিয়মিত স্কুল খোলা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা এড়াতেই শিশুদের টিকাকরণের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারই নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য ২৩,১২৩ কোটি টাকার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ৭৩৬টি জেলায় পেডিয়াট্রিক সেন্টার ও ৪০০০ টি বিশেষ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট গঠন করা হবে বলেও তিনি জানান। আগামী নয় মাসের মধ্যেই এই পরিকল্রনাকে বাস্তবায়ন করা হবে।