Manipur Violence: ফের অগ্নিগর্ভ মণিপুর, হিংসায় জড়িত থাকায় হেফাজতে প্রাক্তন বিধায়ক সহ ৩

TV9 Bangla Digital | Edited By: অঙ্কিতা পাল

May 23, 2023 | 9:52 AM

Manipur Violence: ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি মণিপুরে। সোমবার ফের কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। আর এই ঘটনায় জড়িত থাকায় এক প্রাক্তন বিধায়ক সহ ৩ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

Manipur Violence: ফের অগ্নিগর্ভ মণিপুর, হিংসায় জড়িত থাকায় হেফাজতে প্রাক্তন বিধায়ক সহ ৩
পরিত্যক্ত ঘর-বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে
Image Credit source: টুইটার

Follow Us

ইম্ফল: ফের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি মণিপুরে (Manipur Violence)। রবিবার রাত থেকেই উত্তর পূর্বের রাজ্যের দিকে দিকে অশান্তি-বিক্ষোভ ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। রবিবার রাতেই ইম্ফল পশ্চিম জেলার এক জায়গায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। দুষ্কৃতীদের গুলিতে সেখানে তিনজন জখমও হন। এদিকে গতকাল বিকেলে ইম্ফলের চেকন এলাকায় এক স্থানীয় বাজারের দখল নিয়ে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঘর-বাড়িতে অবাধে চলে লুঠ। কিছু কিছু বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। এবার এই হিংসাত্মক ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি জানিয়েছে, এই সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন প্রাক্তন বিধায়ক। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রবিবার রাতে ইম্ফল পশ্চিম জেলায় এক ঘটনায় তিনজন সামান্য আহত হন। পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে ডাবল ব্যারেল বন্দুক পাওয়া গিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “সোমবার ইম্ফল শহরের নিউ ল্যাম্বুলেন অংশে আরেকটি ছোটখাটো ঘটনা ঘটে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে একজন প্রাক্তন বিধায়ক এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। সিঙ্গেল ব্যারেল বন্দুক বহনকারী দু’জন সশস্ত্র কর্মী বিক্রেতাদের হুমকি দেয় এবং অঞ্চলটি খালি করতে বলে। প্রাক্তন বিধায়কসহ এই দু’জনকেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।” এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, গত ১০ দিন ধরে মণিপুরের অবস্থা শান্তিপূর্ণই ছিল। তিনি রাজ্যবাসীকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করেন। পাশাপাশি রাজ্যে শীঘ্রই শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এই মাসেই শুরুর দিকে মণিপুরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। কার্ফু জারি হয়। বন্ধ হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। সেনা, আধা সেনা,অসম রাইফেলসের বাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ওই হিংসায় প্রায় ৭০ জনের প্রাণ গিয়েছিল বলে জানা যায়। আর প্রাণ বাঁচাতে ওই হিংসার সময় নিজেদের বাড়ি ছেড়ে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। বাড়ি খালি পড়ে থাকে। সোমবার দুপুর ২ টোর দিকে ইম্ফল পূর্ব জেলার নিউ ল্যাম্বুলেনের নিউ চেকন বাজার এলাকায় সেইসব বেশ কিছু পরিত্য়ক্ত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই ফের অশান্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। এদিকে রবিবার প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয়, রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা ২৬ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। হিংসাত্মক ঘটনা রুখতেই এই নিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হল।

প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ অনেকদিনের। মণিপুরের মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশই মেইতেই সম্প্রদায়। রাজ্য়ের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় হয়েও মাত্র ১০ শতাংশ এলাকা জুড়েই তাঁদের বসবাস। তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত না হওয়ায় পাহাড় এবং জঙ্গলের সংরক্ষিত এলাকায় তাদের জমি কেনার অধিকার নেই। তফসিলি জাতির অন্তর্ভুক্ত হলে তাঁরা পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারবেন। আর মেইতেই সম্প্রদায়ের এই দাবিতে কুকি সম্প্রদায়ের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ রাজ্যের পাহাড়-জঙ্গল থেকে তাদের বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ৩ মে থেকে শুরু হওয়া হিংসার পরই রাজ্যে শান্তি ফেরাতে ঘাঁটি গেঁড়েছে ভারতীয় সেনা এবং অসম রাইফেলস-এর জওয়ানরা। নিয়মিত টহলদারির মাধ্যমে গত কয়েকদিনে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এনেছিল তারা। কিন্তু রবিবার রাত থেকে ফের মণিপুরের বেশ কিছু জায়গায় হিংসার খবর মিলছে।

Next Article