চণ্ডীগঢ়: দেড়দিন কেটে গিয়েছে, অন্ধকারে ডুবে রয়েছে গোটা শহর। বিদ্যুৎকর্মীদের ধর্মঘটের (Power supply Workers Strike) জেরে প্রায় ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অন্ধকারেই ডুবে যায় চণ্ডীগঢ়(Chandigarh)-র একাংশ। সোমবার বিকেল থেকেই গোটা শহরের বিদ্যুৎ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, প্রভাবিত হয় জল সরবরাহ ব্যবস্থাও। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ট্রাফিক লাইটও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। পিছিয়ে যায় একাধিক হাসপাতালের অস্ত্রোপচারও।
বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে একাধিক সরকারি হাসপাতালের অস্ত্রোপচারও পিছিয়ে দেওয়া হয়। চণ্ডীগঢ়ের স্বাস্থ্য পরিষেবার অধিকর্তা সুমন সিং বলেন, “আমাদের কাছে বিকল্প পরিকল্পনা রাখা ছিল, তবে শুধুমাত্র জেনারেটরের উপরই হাসপাতালের বিদ্যুৎ সরবরাহের ১০০ শতাংশ ভার ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই বেশ কিছু অস্ত্রোপচার, যেগুলি কম গুরুত্বপূর্ণ, তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বা আপাতত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।”
দিল্লি সীমানা লাগোয়া অঞ্চলগুলিতেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়, অনলাইন ক্লাস ও কোচিং ইন্সটিটিউটও বন্ধ করে দিতে হয়। জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ বিভাগের বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেই বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা বিগত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাজ্যের পরামর্শদাতা ধরম পাল বিদ্যুৎ দফতরের ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলেন, কিন্তু কোনও সুফলই মেলেনি। কর্মীদের দাবি, বেসরকারিকরণ হলে কাজের ধরন ও শর্তে পরিবর্তন হবে এবং বিদ্যুতের দামও বেড়ে যাবে।
কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে যে বিরুপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা রুখতে মঙ্গলবার বিকেলেই চণ্ডীগঢ় প্রশাসনের তরফে জরুরি পরিষেবা রক্ষণাবেক্ষণ আইন জারি করা হয়েছে। এই ধারায় আগামী ছয় মাসের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের বিক্ষোভের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
চণ্ডীগঢ় প্রশাসনের আধিকারিকের তরফে জানানো হয়েছে, তারা বিদ্যুৎ সরবরাহ জারি রাখার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে একাধিক বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ জানিয়েছেন। রাজ্যের উৎপাদন ও শিল্প ক্ষেত্রগুলিতেও এর প্রভাব পড়েছে।
মঙ্গলবার পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের তরফে হস্তক্ষেপ করা হয় এবং বুধবারের মধ্যে এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফেও কর্মীদের এই বিক্ষোভের সমালোচনা করা হয়েছে। চণ্ডীগঢ় প্রশাসনের তরফে হাজির আইনজীবী অনিল মেহতা জানান, বিদ্যুৎ সঙ্কট মেটাতে পঞ্জাব ও হরিয়ানা সরকারের কাছে অতিরিক্ত কর্মী পাঠিয়ে সহায়তা করতে বলা হয়েছে।