অযোধ্যা: অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা আর কয়েক দিনের অপেক্ষা। মন্দিরে স্থাপনের জন্য, কর্নাটকের প্রখ্যাত ভাস্কর অরুণ যোগীরাজের খোদাই করা রাম মূর্তিটি বেছে নিয়েছে রাম মন্দির ট্রাস্ট। এবার এই রাম মূর্তি সম্পর্কে আরও তথ্য জানালেন ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচিত রাম মূর্তিটির পা থেকে কপাল পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৫১ ইঞ্চি। আর ওজন ১.৫ টন। শুধু তাই নয়, প্রতি বছর রামনবমীতে ঠিক দুপুর ১২টায় রা মূর্তির কপালে এসে পড়বে সূর্যের রশ্মি। জল, দুধ এবং ‘আচমন’-এও মূর্তিটির কোনও ক্ষতি হবে না। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাম মূর্তিটির দৈর্ঘ এবং গর্ভগৃহে স্থাপনের পর তার উচ্চতা কত হওয়া উচিত, এই বিষয়ে ভারতের বিশিষ্ট মহাকাশ বিজ্ঞানীদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।
চম্পত রাই বলেছেন, “মহাকাশ বিজ্ঞানীদের পরামর্শে মূর্তিটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে, অর্থাৎ, রাম নবমীতে খোদ ভগবান সূর্য শ্রীরামের অভিষেক করবেন। দুপুর ১২টায় সূর্যের রশ্মি সরাসরি তাঁর কপালে পড়বে।” রামং মূর্তিটি সম্পর্কে ট্রাস্টের সম্পাদক জানিয়েছেন, গাঢ় রঙের পাথরে তৈরি করা হয়েছে মূর্তিটি। মূর্তিটির মুখে যেমন ভগবান বিষ্ণুর দেবত্ব এবং রাজপুত্রের তেজ রয়েছে, তার পাশাপাশি সেই মুখ কোনও পাঁচ বছরের শিশুর মতো নিষ্পাপও বটে। মুখের স্নিগ্ধতা, চাহনি, হাসি, শরীরের গঠন ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখেই এই মূর্তিটি বাছাই করা হয়েছে।
মূর্তিটি গ্রানাইট পাথরের তৈরি বলে, হাজার বছরেও সূর্যের আলো, বাতাস এবং জলে এর ক্ষয় হবে না। কারণ গ্রানাইট আর্দ্রতা শোষণ রোধ করে। মূর্তিকে দুর্বল করে দিতে পারে বলে মূর্তিটিতে লোহাও ব্যবহার করা হয়নি। এটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মূর্তির নীচের অংশে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি পাথর তৈরি হবে। উপরে দিকে কোনও কংক্রিটও ব্যবহার করা হয়নি। কারণ কংক্রিট ১৫০ বছরের বেশি টেকে না।
মন্দিরের গর্ভগৃহে শুধুমাত্র এই রাম মূর্তিটিই স্থাপন করা হবে। ২২ জানুয়ারি এই মূর্তিটিই উন্মোচন করা হবে। আট মাস পর, মন্দিরের বাকি কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর, মন্দিরের প্রথম তলায় স্থাপন করা হবে লক্ষ্ণণ, সীতা এবং হনুমানের মূর্তি। এছাড়া রাম মন্দির চত্বরে, মহর্ষি বাল্মীকি, মহর্ষি বশিষ্ঠ, মহর্ষি বিশ্বামিত্র, মহর্ষি অগস্ত্য, নিষাদ রাজ, মাতা শবরী এবং দেবী অহল্যার মন্দিরও নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যেই মন্দিরে জটায়ুর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। মন্দিরটি উত্তর ভারতে হলেও, এর স্থাপত্য দক্ষিণ ভারতের মন্দির দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে জানিয়েছেন চম্পত রাই। তাঁর মতে, গত ৩০০ বছরে উত্তর ভারতে এমন কোনও মন্দির তৈরি হয়নি।