দমবন্ধ হয়ে ছটফট করছেন করোনা রোগী, তবুও দেওয়া হল না অক্সিজেন! সিসিটিভিতে ধরা পড়ল নির্মম চিত্র

সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসার পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গোটা বিষয়ের তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

দমবন্ধ হয়ে ছটফট করছেন করোনা রোগী, তবুও দেওয়া হল না অক্সিজেন! সিসিটিভিতে ধরা পড়ল নির্মম চিত্র
সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে গোটা ঘটনা।
Follow Us:
| Updated on: Apr 15, 2021 | 2:29 PM

ভোপাল: চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন শ্বাসকষ্টে ভুগছেন করোনা রোগী, তবুও নিরুত্তাপ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। দেশে যেখানে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, রোগীর চাপে বিভিন্ন রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়ছে, সেখানেই চরম অমানবিকতার সাক্ষী থাকল মধ্য প্রদেশ।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবপুরীর একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এক করোনা রোগী। বিশেষ কোনও উপসর্গ না থাকলেও ডায়ালিসিস চলায় কো-মর্ডিবিটির ভয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। তবে মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালের এক কর্মীই তার অক্সিজেন বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত ওই ব্যক্তির ছেলে জানান, বিগত কয়েকদিন ধরেই সুস্থ ছিলেন তাঁর বাবা। ঠিক মতো খাবারও খাচ্ছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টা অবধি তিনি ছিলেন। তবে পরেরদিন সকালেই হাসপাতাল থেকে ফোন আসে। সেখানে গিয়ে তিনি বাবার পরিস্থিতি দেখে স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্সিজেন দেওয়ার অনুরোধ জানান কিন্তু তারা অক্সিজেন দিতে অস্বীকার করে। এরপর তিনি নিজেই বাবাকে আইসিইউতে নিয়ে যান। সেখানে ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃতের পরিবারের তরফে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ করা হলেও প্রথমে হাসপাতাল তা মানতে অস্বীকার করে। এরপর জোর করায় সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করতেই ঘটনার সত্যতা সামনে আসে। দেখা যায়, এক স্বাস্থ্যকর্মীই রাতে অক্সিজেন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেন। সকালে তাঁর প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হলেও স্বাস্থ্যকর্মীরা তা দেখেও না দেখার অভিনয় করে। ফুটেজের শেষভাগে দেখা যায়, রোগীর বিছানার কাছে দাড়ানো এক কর্মী এক সহকর্মীকে সাহায্যের জন্য ডাকছে। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যকর্মীদের কেউই পরেছিলেন না পিপিই কিটও।

ওই করোনা রোগীর ছেলে এসেই তাঁকে নিয়ে আইসিইউ ওয়ার্ডে নিয়ে যায়। কিন্তু ১৫ মিনিটের মধ্যেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়। সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসার পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গোটা বিষয়ের তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ওই রোগীর ডায়লিসিস চলছিল। হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও খুব কম ছিল। তবুও গোটা বিষয়ের তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনায় কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। জেলা হাসপাতালের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি জানান, বর্তমানে রাজ্যের  ৭৬টি অক্সিজেন বেড, ৩০টি আইসিইউ বেড ও ১৩টি অক্সিজেন কনট্রাকটর মেশিন রয়েছে।

আরও পড়ুন: প্রথম ডোজ়ে কোভ্যাকসিন, দ্বিতীয় ডোজ় কোভিশিল্ডের! টিকা বিভ্রাটে ফের কাঠগড়ায় যোগীরাজ্য