নয়া দিল্লি: পাকানো হয়ে গিয়েছে বিরোধী জোটের সলতে। এবার শুধু প্রজ্বলনের অপেক্ষা। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নেতৃত্বে থাকা এনডিএ-র বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়বে ২৬টি বিরোধী দল। মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুর বৈঠকেই বিরোধী জোটে সিলমোহর পড়ে। জোটের নাম দেওয়া হয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (Indian National Development Inclusive Alliance), যা সংক্ষেপে ‘ইন্ডিয়া’ (I.N.D.I.A) নামেই পরিচিত হচ্ছে। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ‘ইন্ডিয়া’ নামটির প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা শুনে বেজায় খুশি হন রাহুল গান্ধী। তৃণমূল সুপ্রিমোও গতকাল বৈঠকে রাহুল(Rahul Gandhi)-কে ‘ফেভারিট’ বলে উল্লেখ করেছেন। এদিকে রাহুল-মমতার সম্পর্কের সমীকরণ বদল হতেই বিপাকে পড়েছে রাজ্য কংগ্রেস। ‘কেন্দ্রে দোস্তি, রাজ্যে কুস্তি’-তে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলার কংগ্রেস নেতারা।
মঙ্গলবার বেঙ্গালুুরুতে বিরোধী জোটের দ্বিতীয় বৈঠকের পরই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ফেভারিট বলে উল্লেখ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী জোটের বৈঠকে যোগ দেওয়া সমস্ত নেতাদের নাম একে একে উল্লেখ করে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি বলেন, “আওয়ার ফেভারিট রাহুল…”
পটনার মতো বেঙ্গালুরুর বৈঠকেও রাহুল গান্ধী ও সনিয়া গান্ধীর মাঝে বসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। মঞ্চেও একাধিকবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তাঁকে কানে কানে কথা বলতে দেখা যায়। অন্যদিকে, বিরোধী বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রথম বক্তা হিসাবে এগিয়ে দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধীই।
বিগত কয়েক বছর ধরে শুধু রাজ্যেই নয়, কেন্দ্রেও কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিভিন্ন ইস্যুতে প্রকাশ্যে কংগ্রেসের বিরোধিতা করেছিলেন মমতা-অভিষেক। সংসদেও কংগ্রেসের ডাকা বিরোধী দলগুলির বৈঠক থেকে শুরু করে বিক্ষোভ কর্মসূচি তৃণমূল এড়িয়েই গিয়েছে বা আলাদাভাবে একই ইস্যু নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সেখানেই হঠাৎ রাহুলের মমতার ফেভারিট হয়ে ওঠায় কার্যতই সংশয় তৈরি হয়েছে রাজ্য কংগ্রেসের মধ্যে। রাজ্যে যেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে জোট বেঁধেছে বাম-কংগ্রেস, সেখানেই কেন্দ্রে আবার সখ্যতা তৈরি করছে দুই দল। বাংলার কংগ্রেসকে চাপে রাখতেই কি হাইকম্যান্ডের সঙ্গে এই ‘দোস্তি’? এমন প্রশ্নও জেগেছে অনেকের মনে।