লখনউ: চিন থেকে ফিরে কোভিড পজিটিভ! রবিবার আগ্রার এক ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তির কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল ইতিবাচক এসেছে। অতি সম্প্রতি তিনি চিনে গিয়েছিলেন। ফলে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতে কোভিড-১৯-এর নয়া উপরূপ বিএফ.৭ সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি ব্যবসায়িক কারণে চিনে গিয়েছিলেন। দুই দিন আগে, ২৩ ডিসেম্বর তিনি সেখান থেকে ভারতে ফিরে আসেন। এরপর একটি বেসরকারি গবেষণাগারে কোভিড পরীক্ষা করিয়েছিলেন তিনি। রবিবার তাঁর রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্টে তিনি করোনা পজিটিভ হিসেবে সনাক্ত হয়েছেন। ওই গবেষণাগারের পক্ষ থেকে তাঁর কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবর রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগকেও জানানো হয়েছে। এরপরই রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ, তাদের দ্রুত প্রতিক্রিয়া দলকে ওই ব্যক্তির বাড়িতে পাঠায়। তাঁর সংস্পর্শে আরও যারা যারা এসেছেন, এখন তাঁদেরও সকলের কোভিড পরীক্ষা করা হবে। তবে ওই ব্যক্তির নমুনায় পাওয়া করোনাভাইরাস, বিএফ.৭ (BF.7) সাবভ্যারিয়েন্ট কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, গুজরাটের ভাবনগরের এক ব্যক্তিকে কোভিড ইতিবাচক হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছিল। তিনিও চিনে গিয়েছিলেন। ১৯ ডিসেম্বর তিনি ভারতে ফিরে এসেছিলেন। তবে, চিনে বর্তমানে সবথেকে বেশি ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের যে রূপ, সেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সাবভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭-এ আক্রান্ত কি না তিনি, তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য তাঁর নমুনা গান্ধীনগরে ইনসাকগের একটি গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত, ভারতে বিএফ.৭ সাবভ্যারিয়েন্টের মোট চারটি ঘটনা নিশ্চিত করা গিয়েছে। তিনটি সংক্রমণ ধরা পড়েছে গুজরাটে, আর অপরটি ওড়িশায়। গত বুধবার, গুজরাটের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছিল, ওই রোগীরা যথাক্রমে জুলাই, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে বিএফ.৭ এবং বিএফ.১২ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁদের তিনজনকেই ঘরেই নিতবাসে রেখে চিকিত্সা করা হয়েছিল। এখন, তাঁরা তিনজনেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
অন্যদিকে ওড়িশায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর এক মহিলার নমুনায় বিএফ.৭ সাবভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছিল। পরীক্ষার সময় ওই মহিলার শরীরে কোভিডের কোনও উপসর্গও ছিল না। ওড়িশা রাজ্য সরকার জানিয়েছে, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে, তার আগে কোভিড পরীক্ষা করিয়েছিলেন। অক্টোবর থেকে ওই মহিলা এবং তার পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন। ভারত থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে তাঁদের কারোরই শরীরে কোভিডের কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, শূন্য কোভিড নীতি থেকে সরে আসার পর, বর্তমানে দাবানলের গতিতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে চিনে। সূত্রের খবর, বর্তমানে সেই দেশে প্রতিদিন অন্তত ৫ লক্ষ করে মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোভিড মহামরির দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় ভারতের করোনা যে ভয়াল ছবি দেখা গিয়েছিল, বর্তমানে চিনের অবস্থা অনেকটাই সেই রকম। হাসপাতালে রোগীদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। অক্সিজেনের ব্যাপক অভাব। তবে শুধু চিন নয়, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, ফ্রান্স-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফের একবার মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনা মহামারি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং এবং থাইল্যান্ড থেকে আগত যাত্রীদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা বাধ্য়তামূলক করা হয়েছে।