হায়দরাবাদ: চিনে বর্তমানে করোনভাইরাসের বিফ.৭ (BF.7) উপরূপের যে তীব্রতা দেখা যাচ্ছে, ভারতের এর প্রভাব ততটা গুরুতর নাও হতে পারে। কারণ, ভারতীয়দের ইতিমধ্যেই ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা তৈরি হয়ে গিয়েছে। রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) আশ্বস্ত করলেন সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বা সিসিএমবির ডিরেক্টর বিনয় কে নন্দিকুরি। তবে, তারপরও ভারতীয়দের সতর্ক থাকার এবং কোভিড মহামারির উপযুক্ত আচরণ অনুসরণ করার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, এই সমস্ত উপরূপগুলির নিয়ে সবসময়ই বাড়তি উদ্বেগ থাকে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভ্যাকসিন বা করোনার আগের রূপগুলিতে আক্রান্ত হওয়ার ফলে তৈরি অনাক্রম্যতাকে লঙ্ঘন করতে পরে এই উপরূপগুলি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বিনয় কে নন্দিকুরি বলেছেন, “ডেল্টার ক্ষেত্রে সংক্রমণের তীব্রতা যতটা ছিল, এই ক্ষেত্রে ততটা দেখা যাবে না। এর কারণ, আমাদের কিছু পরিমাণে গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা তৈরি হয়েছে। আমরা ভাইরাসটির অন্যান্য রূপের সংস্পর্শে এসেছি, তাই আমাদের গোষ্ঠী অনাক্রম্যতা তৈরি হয়েছে। আমরা ডেল্টা তরঙ্গ দেখেছি। তারপর আমাদের টিকা দেওয়া হয়েছে। তারপর ওমিক্রন তরঙ্গ এসেছিল এবং আমরা বুস্টার ডোজ নিয়েছি। বিভিন্ন দিক থেকেই চিনের থেকে আমাদের পরিস্থিতি আলাদা। সেই কারণে চিনে যা ঘটছে, তা ভারতে নাও হতে পারে। আসলে চিন শূন্য কোভিড নীতি অনুসরণ করেছিল। পাশাপাশি চিনে, খুব বেশি মানুষ ভ্যাকসিন নেননি। ভারতে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সকলকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এমনকি, বয়স্ক বা অসুস্থ জনগোষ্ঠীর অধিকাংশকে বুস্টার ডোজ়ও দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, করোনার নয়া উপরূপ বিএফ.৭ থেকে ভারতে মহামারির আরও এক তরঙ্গ তৈরি নাও হতে পারে। বিষয়টি এই মুহুর্তে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। নান্দিকুরি আরও বলেছেন, এখনও পর্যন্ত এই উপরূপটি ততটাও উদ্বেগজনক বলে মনে হচ্ছে না, যে এটা থেকে মহামারির আরও একটি তরঙ্গ তৈরি হবে। বর্তমানে ভারতে কোভিড পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসা এবং টিকা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ক্ষমতা তৈরি হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত ভারতে করোনভাইরাসের বিএফ.৭ উপরূপের চারটি সংক্রমণের ঘটনা সনাক্ত করা গিয়েছে। চিন-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন ফের করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, একই সময়ে ভারতে সংক্রমণ ক্রমে কমছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তা অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে মাত্র ২০১টি নতুন করোনভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৩৯৭-এ।