AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Alapan Bandopadhyay: ‘অত্যন্ত বিরক্তিকর পর্যবেক্ষণ’, সুপ্রিম কোর্টে আলাপন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন

Alapan Bandopadhyay: কেন্দ্রের মামলা স্থানান্তরের আর্জি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র।

Alapan Bandopadhyay: 'অত্যন্ত বিরক্তিকর পর্যবেক্ষণ', সুপ্রিম কোর্টে আলাপন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন
সুপ্রিম কোর্টে আলাপন মামলার শুনানি
| Edited By: | Updated on: Nov 15, 2021 | 3:38 PM
Share

নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে আলাপন (Alapan Bandopadhyay) মামলা। হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র। কেন দিল্লিতে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের CAT-এ শৃঙ্খলাভঙ্গ মামলার শুনানি নয়?,দিল্লিতেই শুনানির আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র। এর আগে কেন্দ্রের মামলা স্থানান্তরের আর্জি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র। প্রশ্ন ওঠে, কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ার নিয়েই।

শীর্ষ আদালতে আলাপন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলল কেন্দ্র। সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহেতা সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চকে জানান, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর রিভিউ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না । এই মামলার বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য শীর্ষ আদালতের কাছে সময় চেয়ে নেন সলিসেটর জেনারেল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়, মামলাটির বিস্তারিত তথ্য জানানোর জন্য আদালতে হলফনামা দেওয়া হবে। সে জন্য আদালতের কাছে সময় চাওয়া হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২২ নভেম্বর।

এদিন সলিসেটর জেনারেল বলেন, “কলকাতা হাইকোর্ট তার এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে এই মামলার নির্দেশ দিয়েছে।” পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায় অত্যন্ত ‘বিরক্তিকর’ বলে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের সামনে উল্লেখ করেন।

শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ উল্লেখ করে, কলকাতা হাইকোর্ট সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের রুল ৬ (২) অনুসারে এই নির্দেশ দিয়েছে। ফের সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহেতা প্রশ্ন তোলেন, এই মামলাটি কেবমাত্র দিল্লি হাইকোর্টের এক্তিয়ারভুক্ত। আর সেক্ষেত্রে ক্যাটের প্রিন্সিপ্যাল বেঞ্চে দিল্লিতে মামলাটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিল। এই মামলা কোনওভাবেই কলকাতা হাইকোর্টের এক্তিয়ারভুক্ত নয়। তুষার মেহেতার বক্তব্য, “ক্যাটের প্রিন্সিপ্যাল বেঞ্চের নির্দেশকে গুরুত্ব  না দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট কীভাবে তার এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে নতুন নির্দেশ দিল?”

কলকাতা হাইকোর্টের শুনানির সময় ক্যাটের প্রতি বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্যকেও অত্যন্ত অসংযত বলে উল্লেখ করেছেন। এদিন শীর্ষ আদালতে তুষার মেহেতা বলেন, “আদালত একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। যখন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থেকে কোনওরকমের পর্যবেক্ষণ করা হয়, তার গুরুত্ব অত্যন্ত অপরিসীম। এবং সেটি সমাজের ওপর আলাদাই প্রভাব ফেলে। বিচারপতিদের কোনও আদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে অসংযত ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়।”

মামলার প্রেক্ষাপট

গত ২৮ মে ঘটনার সূত্রপাত। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’এর পর ওই দিন কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী একটি রিভিউ বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৎকলীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু, ক্ষয়ক্ষতি সামলানোর জন্য ব্যস্ত থাকায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হননি আলাপন। এরপরই তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁকে দিল্লিতে নর্থ ব্লকে হাজির হতে বলে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে উপস্থিত না হয়ে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রধানমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে উপস্থিত না হওয়ায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ ওঠে। বিপর্যয় মোকাবিল আইন ভঙ্গ করার জন্য কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? সেই জবাব চাওয়া হয় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপরই অবসর নেন তিনি।

নির্ধারিত সময় দিল্লিতে যোগ না দেওয়ায় রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শো-কজ করে কেন্দ্র। এরপর ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং-এর তরফে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়া খারিজ করার জন্য ‘সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে’র কলকাতা বেঞ্চে সম্প্রতি মামলা করেছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

আলাপনবাবুর অভিযোগ,  অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসেবে তাঁর যে সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য, তা তিনি পাচ্ছেন না। এই দাবিতে কলকাতার ক্যাটের বেঞ্চে যান আলাপনবাবু।  কিন্তু দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়।

২২ অক্টোবর সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের বা ক্যাটের (CAT) কলকাতা বেঞ্চ থেকে মামলা দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় প্রিন্সিপাল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই  হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আলাপন বন্দোপাধ্যায়।

গত ২৯ অক্টোবর হাইকোর্টে স্বস্তি পান মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কেন দিল্লিতে মামলা সরানো হবে? প্রশ্ন তুলে ‘ক্যাট’-এর চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট করে দেয়, এই মামলা শুনবে কলকাতার ক্যাট।

কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

কলকাতা থেকে সরিয়ে কেন দিল্লিতে সিএটি মামলা? প্রশ্ন ছিল আলাপনবাবুর। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ আলাপনবাবুর প্রশ্নের শীলমোহর দেন। ক্যাটের পক্ষ থেকে বলা হয়, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো উচ্চ পদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত দিল্লিতেই হওয়া প্রয়োজন। যদিও ক্যাটের যুক্তি ধোপে টেকেনি। ‘ক্যাট’-এর চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ।

আলাপনবাবুর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং। গত ১৮ অক্টোবর প্রাথমিক পর্যায়ের শুনানির জন্য তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়।  যদিও আলাপনবাবুর অনুরোধের সেই শুনানির দিন পিছিয়ে ২ নভেম্বর করা হয়েছে। এরই মধ্যে হাইকোর্টে আবেদন জানান তিনি।

সেই মামলাতেই স্বস্তি পেয়েছিলেন আলাপনবাবু। কিন্তু এবার হাইকোর্টের নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র।

আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় প্রথমবার ধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করল সিবিআই