ঋষিকেশ: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার ধসে পড়া সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার হওয়া শ্রমিকরা। সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধারের পর, প্রথমে এক স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁদের। এরপর, বায়ুসেনার চিনুক কপ্টারে উড়িয়ে আনা হয়েছিল ঋষিকেশ এইমস হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার ঋষিকেশ এইমস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৭ দিন আটকে থাকার পর উদ্ধার হওয়া ৪১ জন শ্রমিককেই চিকিৎসাগতভাবে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। আর এরপর, রাতেই অধিকাংশ শ্রমিক বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। তবে, হাসপাতালের পক্ষ থেকে ৪০ জন শ্রমিককে ছাড়া হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের এক কর্মীকে চিকিৎসার জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। তবে, তাঁর অসুস্থতা জন্মগত, সুড়ঙ্গে আটকে থাকার জন্য নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে, এইমস ঋষিকেশের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট, অধ্যাপক ডা. আরবি কালিয়া, জেনারেল মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রবিকান্ত এবং হাসপাতাল প্রশাসনিক প্রধান, ডা. নরেন্দ্র কুমার বলেছেন, “প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর, এই শ্রমিকদের দেহে কোনও শারীরিক আঘাত বা অন্য কোনও রোগের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আগে থেকেই তাদের যে সকল রোগ ছিল, তার জন্যও তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এছাড়া, তাদের রক্ত পরীক্ষা, কিডনি পরীক্ষা, ইসিজি, লিভার ফাংশন পরীক্ষা এবং এক্স-রে করা হয়েছে। সমস্ত শ্রমিক শারীরিকভাবে স্বাভাবিক এবং ক্লিনিক্যালি স্থিতিশীল আছেন।” ।
#WATCH | Uttarkashi tunnel rescue: 8 workers who hail from UP arrive in Lucknow, CM Yogi Adityanath to meet them shortly
41 workers who were trapped in the Silkyara tunnel from November 12 were rescued on November 28 pic.twitter.com/XyenEJjHQW
— ANI (@ANI) December 1, 2023
উত্তরাখণ্ডের যে শ্রমিককে হাসপাতালে রেখে দেওয়া হয়েছে, তাঁর সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. রবিকান্ত জানিয়েছেন, তার শরীরে অ্যাট্রিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট ধরা পড়েছে। তবে, তার সঙ্গে সুড়ঙ্গে আটকে যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। এই রোগ তার জন্মগত অসঙ্গতি। তিনি বলেছেন, “তাঁর শারীরিক অবস্থা এবং ভাইটালস স্বাভাবিক রয়েছে। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাঁকে ডিজাস্টার ওয়ার্ড থেকে কার্ডিওলজি বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ব্যাধির সঙ্গে সুড়ঙ্গে ধস নামার কোনও সম্পর্ক নেই।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকেও জানিয়েছে। প্রয়োজনে দুই সপ্তাহ পর নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে শ্রমিকদের। চিকিৎসকরা মনে করছেন, প্রায় তিন সপ্তাহ সুড়ঙ্গে আটকে তাকার কারণে তাদের মানসিক সমস্যা হতে পারে।
আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিকের মদ্যে ১৫ জনই ছিলেন ঝাড়খণ্ডের। এছাড়া, আটজন উত্তর প্রদেশের, পাঁচজন করে ওড়িশা ও বিহারের, তিনজন পশ্চিমবঙ্গের, দুজন অসম এবং উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের একজন করে শ্রমিক ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের বিমানে রাজ্যে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকারই। অন্যদিকে, উত্তর প্রদেশের আটজন শ্রমিক শুক্রবার সকালেই লখনউ পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।