তামিলনাড়ুর কুন্নুরে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত সহ ১৩ জন সেনাকর্মী। বলা বাহুল্য, জেনারেল বিপিন রাওয়াতের মৃত্যুতে ভারতীয় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আকস্মিকভাবে এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। রাওয়াতের মৃত্যুতে প্রতিরক্ষার উচ্চস্তরে হঠাৎ করেই নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। কে হবেন দেশের পরবর্তী প্রতিরক্ষা প্রধান? এই প্রশ্নও নানা মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকের এখনও স্পষ্ট করে জেনে উঠতে পারেননি দেশের প্রতিরক্ষা প্রধানকে কী কাজ করতে হয়। সেই আবহেই একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কেন প্রতিরক্ষা প্রধানের এই পদটি এতটা গুরুত্বপূর্ণ…..
সিডিএস পদ তৈরির নেপথ্য কাহিনী
২০১৯ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য দেশের শাসনভার নেওয়ার পর, ৩১ ডিসেম্বর জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ পদে নিয়োগ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন সরকার। ১৯৯৯ সালের কার্গিল রিভিউ কমিটির রিপোর্ট পর্যবেক্ষণের পর ২০০১ সালে এনডিএ সরকারের সময়কালে মন্ত্রিগোষ্ঠী এই ধরনের একটি পদ তৈরির সুপারিশ করেছিল। ওই কমিটিক সুপারিশ ছিল দেশের প্রতিরক্ষাকে আরও মজবুত করতে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিরক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এই ধরনের একটি পদ তৈরি করা প্রয়োজন। সেই মতো ২০১৯ সালের লালকেল্লার স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ থেকে এই পদে নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছিলেন সিডিএস হবে দেশের সেনা বাহিনীর প্রধান উপদেষ্টা এবং ভারতীয় সেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনা নিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে পরামর্শ দেবেন।
সিডিএসের কাঁধে গুরুদায়িত্ব
নামে উপদেশ দেওয়ার কাজ হলেও সিডিএসকে পালন করতে হত গুরুদায়িত্ব। দক্ষতার সঙ্গে আমৃত্যু সেই দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়াত। কী কী দায়িত্ব থাকে সিডিএসের, দেখে নেওয়া যাক
১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে সেনা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
২. সিডিএস কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও তিন বাহিনীর প্রধান উপদেষ্টা
৩. চিফ ও স্টাফ কমিটির স্থায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকেন সিডিএস
৪. কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর আওতাধীন প্রতিরক্ষা বিষয়ক কাউন্সিলের স্থায়ী সদস্য সিডিএস
৫. সেনার উপদেষ্টার হিসেবে পরমাণু কম্যান্ড অথরিটির দায়িত্ব
৬. তিন বাহিনীর অপারেশন, সরবরাহ, পরিবহন, প্রশিক্ষণ, সহায়তা পরিষেবা, যোগাযোগ, মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদিতে নজরদারি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হয় সিডিএসকে।
৭. অপব্যয় ব্যয় হ্রাস করে তিনটি সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিষেবার উন্নয়ন ও কার্যকারিতায় সংস্কার আনাও সিডিএসের অন্যতম গুরুদায়িত্ব।
কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানা গিয়েছিল, দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক চার তারা পদমর্যাদার জেনারেল। দেশের তিন সেরা বাহিনীর প্রধানদের মত সমপরিমাণ বেতন পেতেন জেনারেল রাওয়াত
আরও পড়ুন Ranjan Gogoi: ‘ইচ্ছা হলে রাজ্যসভায় যাই’, অযোধ্যা মামলার বিতর্ক নিয়েও মুখ খুললেন রঞ্জন গগৌ