Ranjan Gogoi: ‘ইচ্ছা হলে রাজ্যসভায় যাই’, অযোধ্যা মামলার বিতর্ক নিয়েও মুখ খুললেন রঞ্জন গগৌ
Former CJI Ranjan Gogoi on Controversy: রাজ্যসভায় তাঁর উপস্থিতি ১০ শতাংশেরও কম। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "ব্যক্তিগতভাবে আমার ওখানে (রাজ্যসভা) যেতে ভাল লাগে না।"
নয়া দিল্লি: অযোধ্যা মামলার (Ayodhya Verdict) শুনানির রাতেই সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court)-র তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৌ (Ranjan Gogoi) ও বাকি বিচারপতিদের পাঁচতারা হোটেলে নৈশভোজের ছবি উঠে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে রায়দানের রাতে অযোধ্যা মামলার বিচারপতিদের বেঞ্চকে নিয়ে নৈশভোজে গিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি। ভাইরাল হওয়া ওই ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল, “যুগান্তকারী অযোধ্যা মামলার শুনানির উদযাপন”।
নিজের বইতেও প্রাক্তন বিচারপতি গগৌ লিখেছিলেন, “ওই দিন বিকেলে আমি বিচারপতিদের নিয়ে খেতে গিয়েছিলেন তাজ মানসিং হোটেলে। আমরা চাইনিজ খাবার খাই এবং ওই রেস্তরাঁর সেরা ওয়াইন পান করি। সকলের মধ্যে আমিই বড় হওয়ায়, বিল আমিই মেটাই।”
প্রায় দুই দশক ধরে চলা বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার রায়দানে উদযাপন করার প্রসঙ্গে সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হলে রঞ্জন গগৌ বলেন, “ওটা উদযাপন ছিল না। আপনারা কী কখনও বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে খেতে যান না, মাঝেমধ্যে বাইরের খাবার খেতে ইচ্ছা করে না?”
এই ধরনের একটি স্পর্শকাতর মামলায় বিচারপতিদের উদযাপন সাধারণ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করতে পারে, এই কথা কি তারা ভাবেননি, এই প্রশ্ন করতেই তিনি যাবতীয় দোষারোপ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ওই মামলায় প্রত্যেক বিচারপতিই চারমাস ধরে কেবল কাজই করেছিলেন। আমার বিচারপতি ও সকলে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলাম। সেই কারণেই আমরা একদিন সামান্য বিরতি নিয়েছিলাম। এইটুকুও কি অনুমতি মিলতে পারে না?”
সম্প্রতিই সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি নিজের আত্মজীবনী “জাস্টিস ফর জাজ” প্রকাশ করেছেন। সেই প্রসঙ্গেই এই সাক্ষাৎকারের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল, সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমার বইতে একটি বাক্য রয়েছে, যে অতীতে হয়তো ওই বেঞ্চে আমার অংশগ্রহণ সঠিক হয়নি।”
ওই সিদ্ধান্ত তাঁর পরিচিতিতেও প্রভাব ফেলেছিল বলে তিনি দাবি করেন। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, “প্রধান বিচারপতিরা স্বর্গ থেকে আসেন না। যখন ৪০ বছর ধরে গড়ে তোলা পরিচিতি, সুখ্যাতি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়, তখন কিছু একটা সিদ্ধান্ত তো নিতেই হবে। কিছু অংশে ভুল হয়ে গিয়েছিল।”
এদিকে, রাজ্যসভায় তাঁর উপস্থিতি নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে, সেই প্রসঙ্গেও তিনি নিজের আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি দুইবারও ভাবেননি।” রাফাল মামলা ও রাম জন্মভূমি মামলার শুনানির উপহার হিসাবেই তিনি রাজ্যসভায় আসন পেয়েছেন, এই অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, “আমি এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলাম কারণ আমি ভেবেছিলাম যে বিচার ব্যবস্থা ও নিজের জন্মভূমি অসমের নানা সমস্যা তুলে ধরতে পারব।”
তবে রাজ্যসভায় তাঁর উপস্থিতি ১০ শতাংশেরও কম। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে আমার ওখানে (রাজ্যসভা) যেতে ভাল লাগে না। এখনও করোনা সংক্রমণ রয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে আমি রাজ্যসভায় যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও, তা পালন করা হয় না।”
তিনি আরও বলেন, “আমার যখন ইচ্ছা হয়, আমি তখন রাজ্যসভায় যাই। যখন আমি মনে করি গুরুত্বপূর্ণ কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এবং আমার বক্তব্য রাখা উচিত, সেই সময় আমি যাই। আমি মনোনিত প্রার্থী, দলের হুইপ মানতে আমি বাধ্য নই। আমি নিজের ইচ্ছায় রাজ্যসভায় যাই, নিজের ইচ্ছায় আসি। আমি রাজ্যসভার স্বাধীন সদস্য।”