এলাহবাদ : দেশে যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে, তখন দেশের একাধিক রাজ্যে চলছিল বিধানসভা নির্বাচন। আর এবার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টকে ঘিরে তৈরি হয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্ক। তাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানাল আদালত। উত্তর প্রদেশ, গোয়া সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সেই সব নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে এলাহবাদ হাইকোর্ট। দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩০০ ছুঁইছুঁই। এমন পরিস্থিতিতেই নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানি চলাকালীন এলাহবাদ হাইকোর্ট বিচারপতি শেখর কুমার যাদব অনুরোধ করেন যাতে রাজনৈতিক জমায়েত বা সভা না হয়। আগামী বছরে যে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে তার প্রচারের জন্য সভা বা মিছিল যাতে না হয়, সরকারকে সে বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আদালতের তরফে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলি চাইলে সংবাদমাধ্যমে প্রচার চালাতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও নির্বাচন কমিশনের কাছেও এই অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর সেই অনুরোধ জানাতে গিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর উক্তিই উল্লেখ করেন বিচারপতি। করোনা নিয়ে দেশবাসীকে বার্তা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অনেক সময় বলেছেন ‘জান হ্যায় তো জাহাঁ হ্যায়’। সে উক্তিই এ দিন শোনা যায় বিচারপতির গলায়।
এ দিন আদালতের তরফে মোদীর টিকাকরণের উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়। এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়ার জন্য প্রশংসা করে আদালত। সেই সঙ্গে আর্জি জানানো হয় যাতে, করোনা নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ করা হয়। এ দিন একটি জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানি বিচারপতি জানান, আদালতে এত বেশি সংখ্যক আবেদন জমে রয়েছে যে, আদালত কক্ষে সব সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে। সেই প্রসঙ্গেই নির্বাচনের বিষয়টি উঠে আসে।
করোনা আবহে একের পর এক রাজনৈতিক সমাবেশ হয়েছিল এ বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে। সেই সমাবেশে কেন অনুমোদন দেওয়া হল, তা নিয়েই ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে। মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলেন, “আপনাদের প্রতিষ্ঠানই এককভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউর জন্য দায়ী।” আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ‘সম্ভবত খুনের মামলা’ হওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। নির্বাচন কমিশনকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেছিলেন, “যখন নির্বাচনী সমাবেশ হচ্ছিল, তখন কি আপনারা অন্য গ্রহে ছিলেন?” এর আগেও করোনাবিধিতে গাফিলতি হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল কমিশন।