মুম্বই : কয়েকমাস আগেই মহারাষ্ট্রে সরকারের পালাবদল ঘটেছে। শিবসেনার শিন্ডে শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারে এসেছে বিজেপিও। একনাথ শিন্ডে নয়া সরকারের মুখ্য়মন্ত্রী হলে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ। কিন্তু মহারাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তনের বিতর্ক এখানেই ধামাচাপা পড়েনি। এখনও বিভিন্ন প্রসঙ্গে উঠে আসছে শিবসেনার ভাঙন প্রসঙ্গ। যেমন মুম্বই সফরে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যে এ প্রসঙ্গ জায়গা করে নিয়েছেন। এই বৈঠকে তিনি উদ্ধব ঠাকরের উপর তোপ দাগেন বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
সামনেই বিএমসি নির্বাচন। সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য মহারাষ্ট্র সফরে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের উপস্থিতিতে বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেই বৈঠকে থেকেই তিনি শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরেকে এক হাত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে অমিত শাহ বলেছেন, শিব সেনার উদ্ধব ঠাকরে বিজেপির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। তাই তাঁকে শিক্ষা দেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন শাহ। তিনি আরও বলেছেন, ‘রাজনীতিতে আমরা সব কিছু সহ্য করে নেব, কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা নয়।’
তিনি এদিন আরও জানিয়েছেন, শুধুমাত্র বিজেপির সঙ্গেই নয় তিনি ভাবধারার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং মহারাষ্ট্রের জনগণের রায়ের অমর্যাদা করেছেন। এর পাশপাশি শিবসেনায় ভাঙনের জন্য মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকেই দায়ী করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, তাঁর লোভের কারণেই শিবসেনার একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছেন। নিজের ক্ষমতার লোভেই তাঁর দল এইভাবে ডুবে গিয়েছে। তাঁর দলের এই পরিণতির জন্য বিজেপি দায়ী নন বলেও জানান তিনি। শাহ আশ্বাস দিয়েছেন, ‘আমি আজ ফের বলতে চাই আমরা কোনওদিন উদ্ধব ঠাকরেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিইনি। আমরা প্রকাশ্যে রাজনীতি করার মানুষ। বন্ধ ঘরে তা করা আমাদের কাজ নয়।’ তিনি বলেন,যাঁরা রাজনীতিতে বিশ্বাসঘাতকতা করেন তাঁদের শাস্তি পাওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, দেশের সবথেকে সমৃদ্ধ মিউনিসিপ্যালিটি হল বৃহনমুম্বাই কর্পোরেশন। আগামী কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজেপির টার্গেট এখানে ক্ষমতা কায়েম করা। এদিনের বৈঠকে কার্যত সেই টার্গেটই বেঁধে দিয়েছেন বিজেপির চাণক্য। অমিত শাহ বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশনায়, বিজেপি এবং আসল শিবসেনা জোটের লক্ষ্য হওয়া উচিত বিএমসি নির্বাচনে ১৫০ টি আসন জেতা। জনগণ মোদীজির নেতৃত্বাধীন বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। উদ্ধব ঠাকরের দলের সঙ্গে নয় যারা আদর্শের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে।’ প্রসঙ্গত, ২০১৪ সাল থেকেই সেনা ও বিজেপির মধ্যে তিক্ততার সম্পর্কের শুরু। তারপর ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দুই দলের মধ্যে মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায় দুই দলের। শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে মহা বিকাশ আগাড়ি সরকার গঠন করে। তারপর থেকেই দুই দলের মধ্যে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ লেগে রয়েছে। এ বছরই ঠাকরে বলেন, বিজেপির সঙ্গে জোটে থেকে ২৫ বছর নষ্ট করেছে তাঁর দল। তবে এদিন অমিত শাহ কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন উদ্ধব ঠাকরেকে।