Amravati: ৬ দিন ধরে শুকনো কুয়োতেই ঘুম, কুয়োতেই আমরণ অনশন! ঘুম উড়েছে প্রশাসনের
Amravati man protest in well: আন্দোলনের কথা উঠলে আমাদের সামনে ভেসে ওঠে, কেউ রাস্তায় বসে ধরনা দিচ্ছেন। নয়তো, কেউ চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছেন, কেউ দাবি আদায়ে আগ্রাসীভাবে রাস্তায় নেমেছেন। কখনও কখনও অনশনও করতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের। কিন্তু এই অভিনব আন্দোলনের ছবিটা একেবারেই আলাদা।
মুম্বই: মাসখানেক আগে, মারাঠা সংরক্ষণ নিয়ে আন্দোলনের জেরে গোটা রাজ্য জুড়ে আলোচনায় উঠে এসেছিল মারাঠা সমাজকর্মী মনোজ জারাঙ্গে পাটিলের নাম। ১৫ দিন ধরে আমরণ অনশন করেছিলেন তিনি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ফলের রস খাইয়ে মনোজ জারেঙ্গের অনশন ভাঙিয়েছিলেন। এবার, মহারাষ্ট্রের অমরাবতী জেলায় মনোজ জারঙ্গের আন্দোলনের মতোই আরও এক অভিনব আন্দোলন শুরু হয়েছে। মনোজ জারঙ্গের মতো সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে বিলাস দত্তুজি চরজানের। বিলাস চরজানের আন্দোলনের পরিসর মনোজ জারাঙ্গের মতো বিশাল নয়। খুব ছোট্ট বিষয় নিয়েই তিনি আন্দোলনে নেমেছেন। কিন্তু সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা এবং তাদের বিরুদ্ধে আম্দোলনকারীর একরোখা মনোভাবের কারণে, এই আন্দোলনের খবর ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে।
অমরাবতী জেলার চান্দুর বাজার মহকুমার সোনোরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাসিন্দা বিলাস দত্তুজি চরজান। সোনোরির ১ নম্বর ওয়ার্ডের এক রাস্তার শুরুতে একটি বড় কুয়ো রয়েছে। ওই কুয়োটি প্রায় গোটা রাস্তাটিই দখল করে রয়েছে। কুয়োটি সরানোর জন্য, গ্রাম পঞ্চায়েতে বেশ কয়েকবার দাবি জানিয়েছেন বিলাস চরজান। তাঁর দাবির লিখিত জবাবও দিয়েছিল প্রশাসন। বিলাসের দাবি, দ্রুত ওই রাস্তা থেকে কুয়োটি সরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু তারপর থেকে সাত-আট মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, লিখিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। এবার, রাস্তা থেকে কুয়োটি সরাতে, ওই শুকনো কুয়র মধ্যেই একটি খাট ফেলে কুয়োর মধ্যেই অনশন শুরু করেছেন। কুয়োটিতেই ঘুমোচ্ছেন তিনি। আর, কুয়োর বাইরে সাইন বোর্ডে লেখা আছে আন্দোলনের কারণ।
TV9-কে বিলাস চরজান বলেছেন, “গত দুই বছর ধরে রাস্তার মধ্য থেকে এই কূপটি সরানোর জন্য অনেক অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু, আজ পর্যন্ত শুধু লিখিত আশ্বাস দিয়ে বা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আমাকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ১১ অগস্টের মধ্যে ওই কুয়ো সরানোর লিখিত আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, আজ পর্যন্ত তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অবিলম্বে যাতে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তার জন্যই আমি অনশন শুরু করেছি।” গত ছয় দিন ধরে টানা ওই কুয়োর মধ্যে অনশন করছেন বিলাস চরজান। কিন্তু, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিলাস বলেছেন, “আপনাদের দাবি মানা না হলে, হিংসার পথে না গিয়ে, অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে এবং ধৈর্য্য ধরে আন্দোলন করাই সমাধানের পথ। এই পথে দাবি পূর্ণ হতে কিছুটা সময় লাগে। কিন্তু প্রশাসন ও শাসকদের আমাদের সামনে নতজানু হতেই হবে। আপনার দাবি সঠিক হলে, এটা ঘটবেই।”
এরপরও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা না নিলে, কুয়োর ভিতরেই তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিলাস চরজান। তারপরই টলক নড়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের। বিলাস চরজানের অভিনব আন্দোলনের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে। পুলিশ ও প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্তা ঘটনাস্থলেই রয়েছেন। কিন্তু, সোনোরির পঞ্চায়েত প্রধান, কিংবা তাঁর সহকারি বা শাসক দলের কোনও সদস্যের এখনও ঘটনাস্থলে পা পড়েনি। বিলাসের দাবি কতদিনে পূর্ণ হয়, এখন সেটাই দেখার।