নয়াদিল্লি: দেশ তখন সবে স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন ভারতের অন্যতম মাথাব্যথা হয়ে উঠল ম্যালেরিয়া। সেইসময় মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা শুনলে চমকে যাবেন যে কেউ। স্বাধীনতার পর বছরে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৭ কোটি। আর বছরে মৃতের সংখ্যা? তা-ও ছিল ভীতিপ্রদ। এক বছরে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ। স্বাধীনতার পর ম্যালেরিয়া রোধে জোর দেয় সরকার। দশকের পর দশক ধরে সেই চেষ্টায় কমেছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, ১৯৪৭ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে প্রায় ৯৭ শতাংশ। ২০২৩ সালে দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লক্ষ। আর মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের।
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ভারতের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ম্যালেরিয়া ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর ফলে ২০২৪ সালের WHO-র হাই বার্ডেন টু হাই ইমপ্যাক্ট (HBHI) গ্রুপে আর রাখা হয়নি ভারতকে। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত ম্যালেরিয়া-মুক্ত দেশ হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে এইচবিএইচআই গ্রুপে ভারতের না থাকা, ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় সাফল্য।
২০২৩ সালে লাদাখ, লাক্ষাদ্বীপ এবং পুদুচেরিতে কেউ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হননি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ১২২টি জেলায় কেউ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হননি। ম্যালেরিয়া রোধে সরকারের পদক্ষেপের ফলেই তা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। তাদের বক্তব্য, ম্যালেরিয়া রোধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে রক্ত পরীক্ষার সংখ্যা। সময়মতো চিকিৎসা হচ্ছে। জেলা ধরে ধরে কৌশল ঠিক করা হয়েছে। বিশেষ করে উপজাতি অধ্যষিত এলাকা ও জঙ্গল এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।