
এর আগে এই বিশেষ ক্ষমতা ছিল বিশ্বের কেবল তিনটি দেশের কাছে। কিন্তু এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে ভারতের নাম। মহাকাশে দুটি মহাকাশযান বা স্যাটেলাইট করার ক্ষমতা ছিল কেবল আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের কাছেই। তবে এই বার সেই কঠিন কাজকেই সম্পন্ন করতে চলেছে ভারতও। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ লঞ্চ করা হবে নতুন মহাকাশ মিশন স্পেস ডকিং এক্সপেরিমেন্ট বা স্পেডেক্স (SpaDex or Space Docking Experiment)।

যখনই মহাকাশচারীদের মহাকাশে পাঠানো হয়, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে তখন তারা যে বিশেষ শাটল বা ক্যাপসুলে করে ভ্রমণ করেন সেগুলিকে ডকিং করতে হয়। সোজা কথায় বললে দুটি মহাকাশযানকে একসঙ্গে সংযুক্ত করতে হয়। দুটি মহাকাশযানের মধ্যে ডকিং সম্পন্ন হলে এবং তবেই মহাকাশচারীরা নিরাপদে স্পেস স্টেশনের চাপযুক্ত কেবিনে প্রবেশ করতে পারেন।

মহাকাশে এই ডকিং সম্পন্ন করা সবচেয়ে কঠিন এবং জটিল পদ্ধতিগুলির মধ্যে একটি। সামান্যতম ভুল যদি হয়ে যায়, তা বিরাট বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। হলিউডের ইন্টারস্টেলার ছবি দেখলে এই পদ্ধতি সম্পর্কে একট আঁচ পাওয়া যায়।

ডকিং-এর জন্য দুটি স্পেস ক্র্যাফট থাকে। ল্যান্ডার স্পেস ক্রাফট এবং কুরিয়ার স্পেস ক্রাফট। এই দুই মহাকাশযানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন প্রক্রিয়াকে ডকিং বলে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভারতের ডকিং মিশনেও দুটি মহাকাশ যান রয়েছে। ইসরো সূত্রে খবর, দুটি মহাকাশযানের নাম হল চেজার (SDX01) এবং টার্গেট (SDX02), প্রতিটির ওজন 220 কিলোগ্রাম করে।

চেজার এবং টার্গেট এই দুই স্যাটেলাইট পৃথিবীর কক্ষপথে বিশাল গতিতে পাক খাচ্ছে। এবার নামের মতোই চেজার স্যাটেলাইটের কাজ হল টার্গেটকে ধাওয়া করে ডকিং সম্পন্ন করা। এই মিশন সফল হলে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে ভারত ডকিং করতে সফল হবে।

স্পেডেক্স মিশনটি অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে ৩০ ডিসেম্বর ভারতীয় সময় রাত ৯টা ৫৮ মিনিটে লঞ্চ করা হবে। ওয়ার্কহর্স PSLV-C60 রকেটের সাহায্যে উৎক্ষেপণ করা হবে। এই রকেট দুটি মহাকাশযানকে পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার উপরে নিম্ন-পৃথিবী কক্ষপথে নিয়ে যাবে।

দুটি মহাকাশযান পৃথিবীর দিকে মুখ করে ৫৫ ডিগ্রি কোণে থাকবে। পৃথিবীর কক্ষপথে মোতায়েন করার পরে, দুটি মহাকাশযান ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার যাত্রা করবে। এরপরে বেঙ্গালুরুতে ইসরোর কন্ট্রোল রুম থেকে ডকং এবং আনডকিং-এর কাজ শুরু করা হবে।

ভারতের নিজস্ব স্পেস স্টেশন স্থাপনের জন্য এই মিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডকিং ক্ষমতা সম্পন্ন নাসার স্পেশ শাটলের মতোই ভারতের মহাকাশযান RLV রিইউসেবল লঞ্চ ভেহিকল পেতেও সাহায্য করবে।