করোনা কড়চা: অ্যান্টিবডির সেম সাইড গোলেই কি মৃত্যুমুখী হয়ে পড়ে মানুষ?

করোনার ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেওয়ার প্রথমদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ, কারণ ভাইরাস আঘাত হানার ৪ দিনের মধ্যেই ৮০ শতাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠেন।

করোনা কড়চা: অ্যান্টিবডির সেম সাইড গোলেই কি মৃত্যুমুখী হয়ে পড়ে মানুষ?
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 17, 2021 | 8:55 PM

নয়া দিল্লি: দেশ করোনায় (COVID 19) কাবু। লাগাতার বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতে হাতে ভ্যাকসিন থাকলেও রোখা যাচ্ছে না মৃত্যু মিছিল। কারণ একাধিক রূপে বারাবর ফিরে আসছে করোনা। তবে আগের থেকে করোনা সম্পর্কে এখন চিকিৎসকদের হাতে তথ্য অনেক বেশি। তাই করোনা রোখার চিকিৎসায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। কীভাবে শরীরকে কাবু করে করোনা?

আমাদের শরীরে একাধিক উপায়ে করোন প্রবেশ করতে পারে। তাই চিকিৎসকরা বারবার বলছেন মাস্ক পরতে, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার করতে। তারপরেও যদি শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশ করে তাহলে সে কোষকে আক্রমণ করে, তার ভেতরে বসবাস শুরু করে। কোষেকে নিজের বেড়ে ওঠার কাজে ব্যবহার করে করোনা। এরপর দ্রুত গতিতে নিজের প্রতিলিপিকরণ করে সে, ফলস্বরূপ সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে দেহের রোগপ্রতিরোধতন্ত্র ভাইরাসটিকে শনাক্ত করে আক্রমণ করে।

দেহের অ্যান্টিবডি ওই ভাইরাসকে নষ্ট করে ফেলে। এটাই যে কোনও ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেহের সহজাত প্রক্রিয়া। মূলত ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার ৪ দিনের পর দেহের অ্যান্টিবডি ভাইরাসকে আক্রমণ করে তাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে। এই সময় দেহের মধ্যে সাইটোকাইনস বেরয়। যার ফলে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।

করোনার ক্ষেত্রে উপসর্গ দেখা দেওয়ার প্রথমদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ কারণ ভাইরাস আঘাত হানার ৪ দিনের মধ্যেই ৮০ শতাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু বাকি ২০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা ৪ দিন পরেও বাড়তে থাকে, কিংবা কাশি, শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে এই সমস্যা ভাইরাসের জন্য হয় না। আসলে দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। তাই করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে ইনকিউবেশন পিরিয়ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনকে লক্ষ্য করে আঘাত করে অ্যান্টিবডি। এ বার দেহের একাধিক কোষ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের মতো। তাই অ্যান্টিবডি ভুল করে দেহের কোষে আঘাত হানা শুরু করে। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফুসফুসে দেখা যায়। এর ফলে দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় দেহে অক্সিজেনের স্যাচুরেশন কমতে থাকে। ফলস্বরূপ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। অর্থাৎ দেহের অ্যান্টিবডির জন্যই শারীরিক সমস্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়। দেহে এই অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলেই পরিস্থিতি বিপদের দিকে ঘুরে যায়। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে এই সংক্রমণ ধরা পড়লেই চিকিৎসার মাধ্যমে দ্রুত উন্নতি সম্ভব। এ ক্ষেত্রে স্টেরয়েড সাইটোকাইনসকে রুখতে পারে। তবে স্টেরয়েডের সঙ্গে অ্যান্টিকগলেন্স ওষুধ চিকিৎসকরা প্রেস্ক্রাইব করেন। তবে স্টেরয়েড স্রেফ চিকিৎসকের পরামর্শেই গ্রহণ করা উচিত।

আরও পড়ুন: করোনার সঙ্গে লড়তে এল নতুন ওষুধ ২-ডিজি, জুনেই মিলতে পারে সমস্ত হাসপাতালে