Assam Airport Controversy: বিমানবন্দর তৈরি করতে কাটা পড়ছে ৩০ লক্ষেরও বেশি চা গাছ, কান্নায় হা-হুতাশ শ্রমিকদের
Assam Airport Controversy: সরকারের তরফে জানানো হয়েছে ২৫০০ একর জমির উপর ওই বিমানবন্দর তৈরি করতে ৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। চা বাগানের মালিকেরা সরকারকে জমি দিতে রাজি হলেও কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত অখুশি।
শিলচর: তৈরি হবে নতুন বিমানবন্দর(Airport), তাই নির্বিচারে গাছ কাটা শুরু হল। সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখালেও, সরকারের তরফে চা বাগান সাফ করে বিমানবন্দর তৈরির জায়গা বানানোর নির্দেশ দেওয়া হল। একদিনেই প্রায় হাজার খানেক গাছ কেটে ফেলার পরই এলাকায় ফের উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনাটি ঘটেছে অসমে(Assam)। বৃহস্পতিবার থেকেই অসমের কাচার জেলায় নতুন বিমানবন্দর তৈরির জন্য গাছ কাটার কাজ শুরু হয়েছে। কড়া পুলিশি পাহারায় শতাধিক বুলডোজার চা গাছ উপড়ানোর কাজ শুরু করে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালেই চা বাগানে গাছ কাটা শুরু হয়। অশান্তি এড়াতে কড়া পুলিশি পাহারা, নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, প্রায় লক্ষাধিক গাছ উপড়ে ফেলা হবে।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা গত ফেব্রুয়ারি মাসেই ঘোষণা করেছিলেন যে নতুন একটি বিমানবন্দর তৈরি করা হবে। এর জন্য কাচারের ডালু চা বাগানের কিছু অংশ ব্যবহার করা হবে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে ২৫০০ একর জমির উপর ওই বিমানবন্দর তৈরি করতে ৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। চা বাগানের মালিকেরা সরকারকে জমি দিতে রাজি হলেও কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত অখুশি।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কাচার চা বাগানের প্রায় ২ হাজার কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। তাদের দাবি, এই গাছগুলিকে ধ্বংস করার আগে শ্রমিকদের হত্যা করতে হবে। উল্লেখ্য, সরকারের এই ঘোষণার পর থেকেই কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে। কাচার জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা একাধিকবার শ্রমিক-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তারা কোনও প্রকার সমঝোতা করতে রাজি নন।
চাল বাগানের মালিকদের সঙ্গে কথা বলার পর জেলা প্রশাসন প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ ১.৫৭ কোটি টাকা ও গ্রাচুয়িটি বাবদ ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু কর্মীরা জানিয়েছেন, এটা তো বাগানের মালিকদের থেকে প্রাপ্য টাকা। এই টাকার বদলে বাগান ধ্বংস করতে দেওয়া যাবে না। সম্প্রতিই বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ বিশাল বাহিনী নিয়ে চা বাগানে মিছিল করে। পুলিশের দাবি, এই মিছিল চা বাগানের শ্রমিকদের ভয় দেখানোর জন্য নয়, বরং পুলিশের উপর মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্যই করা হয়েছে। যে বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গাছ কাটা রুখতে প্রতিদিন শ্রমিক ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ দেখাবে। এদিকে, চলতি সপ্তাহের বুধবারই কাচার জেলার ডেপুটি কমিশনার ডালু চা বাগান ও আশেপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। দ্রুত এই জায়গাগুলিতে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জল্পনা শোনা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকেই গাছ কাটা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ চা বাগানের নির্দিষ্ট কিছু এলাকা কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে রাখে যাতে বিক্ষোভকারীরা চা বাগানের ভিতরে ঢুকতে না পারে এবং গাছ কাটায় বাধা দিতে না পারে। আধিকারিকদের সামনে শ্রমিকদের কান্নাকাটি করতেও দেখা যায়। তবে তাতে মন গলেনি প্রশাসনের।