নয়া দিল্লি : পেগাসাস নিয়ে আবারও উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কেন্দ্রে হলফনামায় স্বচ্ছতা নেই। এবার পেগাসাস কাণ্ডের তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। আর এই নিয়েই এবার ফের একবার কেন্দ্রকে আক্রমণ শানালেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তাঁর বক্তব্য, পেগাসাস হল “ভারতের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা”। ইসরায়েলি স্পাইওয়্যারের সংস্থার তৈরি পেগাসাস (Pegasus) ইস্যুতে আজ সুপ্রিম কোর্ট তিন সদস্যের প্যানেল গঠনের নির্দেশের পর এই মন্তব্য করেছেন রাহুল গান্ধী।
এর আগে সংসদের অধিবেশনের সময়, পেগাসাস ইস্যুতে দফায় দফায় উত্তাল হয়েছিল লোকসভা ও রাজ্যসভা। কার্যত অচল হয়ে গিয়েছিল সংসদ। আজ সেই কথাও স্মরণ করিয়ে দেন রাহুল গান্ধী। তিনি আজ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “পেগাসাস হল ভারতীয় গণতন্ত্রকে চূর্ণ বিচূর্ণ করার চেষ্টা। পেগাসাস দেশ এবং দেশের প্রতিষ্ঠানের উপর আক্রমণ। আমি বিশ্বাস করি, সুপ্রিম কোর্ট গঠিত কমিটি সত্যিটা খুঁজে বের করবে।”
বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারকে কার্যত আক্রমণ শানিয়ে বলেন রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তোলেন, “কোন এজেন্সি পেগাসাস কিনেছে?” কেন্দ্রের থেকে এর উত্তর চেয়েছেন তিনি। আরও বলেন, “সংসদের শেষ অধিবেশনে আমরা পেগাসাস ইস্যুটি উত্থাপন করেছিলাম। আজ সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণ দিয়েছে এবং আমরা যা বলছিলাম তা সমর্থন করেছে।”
রাহুল গান্ধী আরও জানান, যে কংগ্রেস নেতারা বিষয়টি সংসদে আবারও উত্থাপন করবেন। তবে তিনি এও বলেন, “আমি নিশ্চিত যে বিজেপি এই নিয়ে বিতর্ক করতে পছন্দ করবে না।”
ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ আরও বলেন, “একাধিক মুখ্যমন্ত্রী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এমনকী বিজেপির মন্ত্রীরাও ছিলেন পেগাসাসের নিশানায়। পেগাসাস ব্যবহার করে কি প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী কোনও ধরনের তথ্য পেয়েছিলেন? যদি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং বিরোধী নেতাদের ফোন ট্যাপিংয়ের ডেটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলে যায়, তাহলে এটি অন্যায়।”
একইসঙ্গে আরও একগুচ্ছ প্রশ্ন তোলেন রাহুল গান্ধী। বলেন, “এই পেগাসাস ব্যবহারের অনুমোদন কে দিয়েছে এবং কে কিনেছে এটি? কারা এই আড়ি পাতার শিকার? এই তথ্য কি অন্য কোনও দেশের হাতে চলে গিয়েছে? তাদের কাছে কী কী প্রশ্ন রয়েছে?”
সুপ্রিম কোর্ট আজ যে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে, তাতে পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রন। আইপিএস অফিসার অলোক জোশী ও জাতীয় ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাব কমিটির চেয়রম্যান ডঃ সুনদীপ ওবেরয় তাঁকে তদন্তে নজরদারির কাজে সহায়তা করবেন।
পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে তদন্তের জন্য তিনজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞকে নিযুক্ত করা হবে, এনারা হলেন গুজরাটের ন্য়াশনাল ফরেন্সিক ইউনিভার্সিটির অধ্যক্ষ ও অধ্যাপক ডঃ নবীন কুমার চৌধুরি, কেরলের অমৃত বিশ্ব বিদ্যাপিঠম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপক ডঃ প্রভাকরণ পি এবং মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহ-অধ্যাপক ডঃ অশ্বিন অনিল গুমাস্তে। দুই মাস বাদে ওই কমিটি সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানির দিন রিপোর্ট পেশ করবে।
আরও পড়ুন : Pegasus Spyware Case: স্বচ্ছতা নেই কেন্দ্রের হলফনামায়, পেগাসাসকাণ্ডের তদন্তে কমিটি গঠন সুপ্রিম কোর্টের