Pegasus Spyware Case: স্বচ্ছতা নেই কেন্দ্রের হলফনামায়, পেগাসাসকাণ্ডের তদন্তে কমিটি গঠন সুপ্রিম কোর্টের

SC on Pegasus Snooping Case: সুপ্রিম কোর্টের গঠিত এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের  অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রন। আইপিএস অফিসার অলোক জোশী তাঁকে তদন্তে সহায়তা করবেন, এছাড়াও জাতীয় ফরেন্সিক বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক আধিকারিকও এই কমিটির অংশ হবেন।

Pegasus Spyware Case: স্বচ্ছতা নেই কেন্দ্রের হলফনামায়, পেগাসাসকাণ্ডের তদন্তে কমিটি গঠন সুপ্রিম কোর্টের
অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 27, 2021 | 1:16 PM

নয়া দিল্লি: “কোনও বিষয়ে রহস্য রাখতে চান, তবে নিজের কাছ থেকেও সেই তথ্য গোপন রাখতে হবে”, জর্জ অরওয়েলের এই উদ্ধৃতি দিয়েই পেগাসাস মামলার (Pegasus Spyware Case) শুনানি শুরু করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ভারতীয়দের উপর নজরদারি করা হয়েছে কিনা, তা জানতে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। এই কমিটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।

পেগাসাস ইস্যু:

চলতি বছরের জুলাই মাসে, বাদল অধিবেশনের শুরুর আগেরদিনই সামনে আসে পেগাসাস তত্ত্ব। দাবি করা হয়, পেগাসাস নামক একটি ইজরায়েলি স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংবাদিক, শিল্পপতিদের উপর। বিরোধীরা এই বিষয়ে তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হয়। এরপরই পেগাসাস নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে।

কেন্দ্রের তরফে এই বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও সুপ্রিম কোর্ট দেশের নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার কথা মাথায় রেখেই গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। এদিন প্রধান বিচারপতি এনভি রমন, বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “বিষয়টির গুরুত্ব যাচাই করে এবং কেন্দ্রের পেশ করা তথ্য পর্যাপ্ত না হওয়ায় আদালতই সত্যের উদঘাটন করে অভিযোগের মূলে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

সুপ্রিম কোর্টের গঠিত কমিটি:

সুপ্রিম কোর্টের গঠিত এই কমিটির পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের  অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রন। আইপিএস অফিসার অলোক জোশী ও জাতীয় ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাব কমিটির চেয়রম্যান ডঃ সুনদীপ ওবেরয় তাঁকে তদন্তে নজরদারির কাজে সহায়তা করবেন।

পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে তদন্তের জন্য তিনজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞকে নিযুক্ত করা হবে, এনারা হলেন গুজরাটের ন্য়াশনাল ফরেন্সিক ইউনিভার্সিটির অধ্যক্ষ ও অধ্যাপক ডঃ নবীন কুমার চৌধুরি, কেরলের অমৃত বিশ্ব বিদ্যাপিঠম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপক ডঃ প্রভাকরণ পি এবং মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহ-অধ্যাপক ডঃ অশ্বিন অনিল গুমাস্তে। দুই মাস বাদে ওই কমিটি সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানির দিন রিপোর্ট পেশ করবে।

কমিটি গঠনের কারণ:

কমিটি গঠনের কারণ হিসাবে শীর্ষ আদালতের তরফে প্রধান সাতটি কারণ তুলে ধরা হয়েছে।  এগুলি হল-

১. তথ্যের গোপনীয়তা ও বাক স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করার অভিযোগ উঠেছে, যা পরীক্ষা করা দরকার।

২. এই অভিযোগের জেরে সম্ভাব্য বিপদ বা ভয়ের কথা ভেবে গোটা নাগরিক সমাজের উপরই এর প্রভাব পড়েছে।

৩. কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি।

৪. বিদেশী পক্ষের জড়িত থাকা এবং বিদেশ থেকে অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

৫. এই সম্ভাবনা রয়েছে যে কিছু বিদেশী সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ দেশের নাগরিকদের নজরদারির আওতায় রাখার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

৬. রাজ্য বা কেন্দ্র সরকার নাগরিকদের অধিকার খর্ব করার সঙ্গে জড়িত রয়েছে, এই অভিযোগও উঠেছে।

৭. বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্যগত দিক থেকে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন, নাগরিকদের উপর প্রযুক্তির ব্যবহার, বিচারবিভাগীয় তদন্তের অধীনে হলেও তদন্তের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং তার আরও তথ্যগত পরীক্ষার প্রয়োজন।

এ দিন শুনানির শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়, “আমরা কেন্দ্রকে নোটিস দিয়েছি। কেন্দ্রের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানানোর জন্যও একাধিক সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই সীমিত তথ্যের হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে, যা গোটা বিষয়টি নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করে না। ওনারা যদি বিষয়টি নিয়ে স্বচ্ছতা রাখতেন, তবে আমাদের কাঁধে এই বোঝা থাকত না। তবে এর অর্থ এই নয় যে রাজ্য যখন ইচ্ছে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার পেয়ে যাচ্ছে।”