নয়া দিল্লি: বাংলার শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে মঙ্গলবার (২ অগস্ট) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। চিঠিতে তিনি বলেছেন, “শিক্ষকরা সমাজের অন্যতম স্তম্ভ। তাঁরাই শিশুদের জীবনের লক্ষ্য স্থির করে দেন, তাদের বিশ্বের সফল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে এবং জীবনে সফল হওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা জোগান। তাই পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিশ্চিতভাবে শিক্ষার মানের ক্ষতি করবে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে হতাশ করবে।” তাই মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে ‘শ্রদ্ধেয় দিদি’ বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেছেন, “কোনও ন্যায়সঙ্গত সমাজের ভিত্তি হল শিক্ষা। শিক্ষা ব্যবস্থার কেন্দ্রে রয়েছেন শিক্ষকরাই এবং তাঁদের নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকাটা শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা, মর্যাদা এবং আস্থা নিয়ে আসবে। তবে, পশ্চিমবঙ্গের বুহ শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষক নিয়োগ ব্যবস্থায় বেনিয়ম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই ধরণের বেনিয়মের ফলে যুবদের ভবিষ্যতের ক্ষতি হচ্ছে।”
দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এমন বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখও করেছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য স্তরের সিলেকশন টেস্ট বা এসএলএসটি-র মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। তবে প্রকৃত নিয়োগ শুরু হয়েছিল দুই বছর পরে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গেই আপোস করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। এর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ দায়েক করা হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে এসএসসি-র গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনিয়ম হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি দূর করতে এবং পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার্থীরা যাতে সর্বোচ্চ শিক্ষালাভের সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে সহায়তা করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে সোমবার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের আয়োজিত অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ ক্ষেত্রে কেলেঙ্কারি নজিরবিহীন। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন বলেও জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আপনি শিক্ষকদের যোগ্যতা পরীক্ষার আয়োজন করেছেন এবং একটি মেধা তালিকা প্রকাশ করেছেন। আপনি আপনার নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মেধা তালিকা পরিবর্তন করছেন। বাংলা হল মা সরস্বতীর ভূমি – স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঋষি অরবিন্দ, সুভাষচন্দ্র বসুর মতো প্রবাদপ্রতীম ব্যক্তিত্বদের জায়গা। তাঁরা বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার আইকন। তার জায়গায় আজ আপনারা কী করছেন? দয়া করে এটা করবেন না।”