কিয়েভ: যুদ্ধ বাধতেই তড়িঘড়ি দেশে ফিরে আসছেন সকলে। কেন্দ্রের তরফেও বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া পড়ুয়া সহ অন্যান্য ভারতীয়দের। ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় প্রতিবেশী দেশ রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও স্লোভাকিয়া থেকে বিশেষ বিমানগুলি ছাড়ছে। একদিকে যেখানে দেশে ফেরার জন্য ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পথও হেঁটে পার করছেন পড়ুয়ারা, সেখানেই এক বাঙালি চিকিৎসক সাফ জানিয়ে দিলেন, যুদ্ধ চললেও তিনি এখনই ইউক্রেন ছেড়ে আসতে চান না। ডঃ পৃথ্বীরাজ ঘোষের এই সিদ্ধান্তের পিছনে কিন্তু নিজস্ব কোনও স্বার্থও নেই।
৩৭ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক ইউক্রেনে ভারতীয় পড়ুয়াদের পরামর্শদাতা হিসাবেও কাজ করেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সমস্ত ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপদভাবে উদ্ধার করে বের করা ও উদ্ধারকারী বিমানে না তুলে দেওয়া অবধি তিনি নিজে ইউক্রেন ছেড়ে যাবেন না বলেই জানিয়েছেন।
ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডঃ ঘোষ বলেন, “আমি কিয়েভে আটকে নেই, আমি স্বেচ্ছায় দেশ ছেড়ে যাচ্ছি না। এখনও অবধি প্রায় ৩৫০ পড়ুয়াকে আমি ইউক্রেন থেকে ভারতে যেতে সাহায্য করেছি। কিয়েভে ওরা আমার ছাত্র-ছাত্রী ছিল। অন্যান্য যে সমস্ত কো-অর্ডিনেটররা ইউক্রেন ছেড়ে দেশে ফিরে গিয়েছেন, তারাও আমায় বাকি ভারতীয় পড়ুয়াদের সাহায্য করার কথা বলে গিয়েছেন। বিশেষ করে সুমিতে যে সমস্ত পড়ুয়ারা আটকে রয়েছে, তাদের সাহায্য করতেই হবে।”
তিনি জানান, খারকিভ থেকে এখনও অবধি প্রায় ২ হাজার পড়ুয়া সুরক্ষিতভাবে বের হতে পেরেছেন। সংঘর্ষ পরিস্থিতি নিয়েও তিনি জানান যে, শুধুমাত্র পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে, এমন নয়। যুদ্ধবিরতিও শুধুমাত্র পড়ুয়াদের জন্য নয়, সমস্ত সাধারণ মানুষদের জন্য ঘোষণা করা হয়েছিল।
পৃথ্বীরাজ ঘোষের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলা হলে, তারাও জানান যে ছেলের সিদ্ধান্তে তারা গর্বিত। তাঁর মা ব্রততী ঘোষ বলেন, “আমি রোজ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে আমার ছেলে ও অন্যান্য পড়ুয়ারা সুরক্ষিতভাবে ফিরে আসতে পারে”। বাবা প্রদীপ ঘোষও জানান, ইউক্রেনে তো পড়ুয়াদের পরিবারের কেউ নেই, তাই পৃথ্বীকেই সকলে বড় দাদা মনে করত। এই কঠিন পরিস্থিতিতে ওদের ছেড়ে তাই ও একা চলে আসতে পারছে না।