আমেদাবাদ : গুজরাটের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ভূপেন্দ্র প্যাটেল। আজ তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ। গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনের খুব বেশি দেরি নেই। তার আগে হঠাৎ করে বিজয় রুপানির পদত্যাগ। এবং তার দু’দিনের মধ্যে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রুপানির ছেড়ে যাওয়া আসনে বসলেন ভূপেন্দ্র প্যাটেল।
গুজরাট বিজেপিতে ভূপেন্দ্র প্যাটেল খুব একটা হেভিওয়েট নাম নন। প্রথমবার বিধায়ক হয়েছেন। সেই তুলনায় আরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েটের নামে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল দলের অন্দরে। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, পরষোত্তম রুপালা কিংবা গুজরাটের বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেলের মধ্যে কেউ এগিয়ে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সবাইকে অবাক করে দিয়ে উঠে আসে ভূপেন্দ্র প্যাটেলের নাম।
ভূপেন্দ্র প্যাটেল ঘাটলোডিয়ার বিজেপি বিধায়ক। আগে এই কেন্দ্রের থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেন আনন্দীবেন প্যাটেল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, ৫৯ বছর বয়সি প্যাটেলের থেকে আরও দক্ষ বেশ কয়েকজনের নাম সরিয়ে রাখা হয়েছে। অনেকেই বিষয়টিকে রাজনৈতিক সমঝোতা হিসেবে দেখছেন।
শনিবার দুপুরে রাজভবনে হাজির হয়েছিলেন বিজয় রূপাণী। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, রাজ্যের কোন সাংবিধানিক ইস্যুতেই তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু বেরিয়েই বিজয় রূপাণী জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।
এরপরই নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তড়িঘড়ি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর ও প্রহ্লাহ যোশীকে পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়। তড়িঘড়ি তাঁরা আহমেদাবাদে পৌছন। গান্ধীনগরে বিজেপির সদর দফতরে বৈঠক বসে। সেই বৈঠকেই ভূপেন্দ্র পটেলের নাম স্থির করা হয়।
জানা গিয়েছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপাণীই ভূপেন্দ্র প্যাটেলের নাম সুপারিশ করেছিলেন বৈঠকে। তিনি গুজরাটের ঘাটলোধিয়া বিধানসভা আসনের জয়ী প্রার্থী। উল্লেখ্য এই আসন থেকেই নির্বাচনে প্রার্থী হতেন গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেল। ভূপেন্দ্র পটেলও আনন্দীবেনের ঘনিষ্ট বলে জানা গিয়েছে।
ইস্তফা দেওয়ার কোনও কারণ উল্লেখ না করেই রূপাণী বলেন, “গুজরাটের উন্নয়ন যাত্রা এ বার নতুন নেতৃত্বের অধীনে যাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সঙ্গে নতুন প্রাণশক্তি ও উৎসাহ থাকবে। এই কথা মাথায় রেখেই আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।”
মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতৃত্বকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন রূপাণী। তাঁর কথায়, “আমার মতো দলীয় কর্মীকে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মানুষের সেবা করার জন্য দলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমার মুখ্যমন্ত্রিত্বের গোটা সময়টা আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরামর্শ পেয়েছি। তাঁর নেতৃত্বে গুজরাটের উন্নয়ন নতুন উচ্চতা স্পর্শ করেছে। এই রাজ্য এবং রাজ্যের মানুষের সেবা করার সুযোগ দেওয়ায় আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।”
আরও পড়ুন : পকেটে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি, সম্পত্তির পরিমাণ ৫ কোটিরও বেশি, গুজরাটের নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে চেনেন?