পটনা: ২০২০ সালে বিজেপির (BJP) সঙ্গে জোট করে বিহারের ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন নীতীশ কুমার (Nitish Kumar)। কিন্তু নীতীশের দল জেডিইউয়ের আসন সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছিল। পটনার অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরে বিহারর সরকারের সবকিছু ঠিকঠাক চলছে না। জোটসঙ্গী বিজেপির সঙ্গে নীতীশের সম্পর্ক ক্রমশই খারাপ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, জনতা দল ইউনাইটেডের প্রভাবশালী নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামচন্দ্র প্রসাদ সিংকে (Ramchandra Prasad Singh) রাজ্যসভায় পাঠাতে রাজি না হতে পারেন জেডিইউ সভাপতি। সূত্রের খবর, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মূল্য চোকাতে হতে পারে এই জেডিইউ নেতাকে। বিজেপি নেতাদের মতে, রামচন্দ্রকে দ্বিতীয়বার রাজ্যসভায় না পাঠানো হলে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নীতীশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে নিজের দলকে সরিয়ে নিতে চাইছেন বলেন মনে করছেন বিহারের বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ।
আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার আগেই নীতীশ কুমার দলের নির্বাচিত বিধায়কদের রাজ্যসভা প্রার্থীর নাম বেছে নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন, যা জেডিইউতে নজিরবিহীন। অতীতে জেডিইউ ৪ জনকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল, কিন্তু দলীয় বিধায়কদের থেকে প্রার্থী নিয়ে পরামর্শ নেওয়ার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বিগত কয়েকমাস ধরে বিজেপি-নীতীশের সম্পর্কে অবনতিই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে প্রধান কারণ। সম্প্রতি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, লালু প্রসাদ যাদবের পরিবারের ওপর সিবিআই অভিযান নিয়ে তিনি একমত নন। যদিও বিজেপি জানিয়েছিল নীতীশ নেতৃত্বাধীন সরকারের কারণে লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমেছে সিবিআই। বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা সিনিয়র বিজেপি নেতা প্রকাশ্যেই সিবিআই অভিযানের জন্য লালন সিং, শিবানন্দ তিওয়ারির মতো জেডিইউ নেতাদের প্রশংসা করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নীতীশকে অস্বস্তিতে ফেলতেই বিজেপি নেতৃত্ব এই কাজ করেছেন।
উল্লেখ্য, বিহারের রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে বিজেপির সঙ্গে জোট সরকারের দায়িত্ব সামলে মোটেও খুশি নয় নীতীশ। কারণ সরকারে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা নীতীশের দলের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ, তাই যে কোনও সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বারবার বিজেপির মুখাপেক্ষী থাকতে হচ্ছে। সম্প্রতি লালু পুত্র তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের ইফতার পার্টিতে উপস্থিত হয়েছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। মাঝে এমন জল্পনাও ছিল যে নীতীশ বিরোধী রাজনৈতিক জোটের হয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এখন বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন কোনও দিকে মোড় নেয় কি না, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।