পটনা: জাতিগত সুমারির (Caste Census) ইস্যুতে বিহারে নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) সরকারের পাশে থাকছে কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব। রবিবার বিহার কংগ্রেস (Bihar Congress) স্পষ্টভাবে বলেছে, জাতিগত সুমারির ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। নীতীশকে জোটসঙ্গী বিজেপির সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা না করে এগিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছে কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, এর আগে বিহারের প্রধান বিরোধী দল লালু প্রসাদ যাদবের আরজেডিও জাতিগত সুমারির ইস্যুতে নীতীশের সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে। তার পরপরই কংগ্রেসের বিধায়ক দলের নেতা অজিত শর্মা বিবৃতি প্রকাশ করে আরজেডিকে অনুসরণের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন।
অজিত শর্মা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে চান… স্পষ্টতই বিজেপি এই বিষয়ে একমত হতে চায় না… নীতীশ কুমারকে এগিয়ে যেতে হবে। কংগ্রেস এই ইস্যুতে সম্পূর্ণরূপে তাঁর সঙ্গে রয়েছে।”
বিহার বিজেপি অতীতে এর আগে জাতিগত সুমারিকে সমর্থন করেছিল। বিহারের পদ্ম বিধায়করা বিধানসভায় দুইবার গৃহীত প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। পরে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার তফসিল জাতি ও উপজাতি ছাড়া অন্য সামাজিক গোষ্ঠীর সুমারি করার দাবি প্রত্যাখ্যান করে। এরপরই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেন বিহারের পদ্ম বিধায়করা।
বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেখানকার এক সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকও হয় এই জাতিগত সুমারি নিয়ে। কিন্তু তারপরেই এই জাতি সুমারি করানোর বিষয়ে ইতিবাচক কোনও মত আসেনি।
উল্লেখ্য, বিহারের রাজনীতিতে বরাবরই জাতিগত ইস্যু একটি বড় ফ্যাক্টর। বিগত কয়েক দশক ধরে সংখ্যাগতভাবে শক্তিশালী ওবিসিরা বিহারের রাজনীতিতে বিশেষ প্রাধান্য পেয়ে এসেছেন। উল্লেখ্য, এই জাতিগত সুমারি হলে ওবিসি জনগোষ্ঠীর মানুষরা ভীষণভাবে উপকৃত হতে পারেন। মণ্ডল কমিশন অনুযায়ী ওবিসিদের কোটা ২৭ শতাংশ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে যদি জাতিগত সুমারি হয়, তাহলে এই হিসেবে আরও বাড়তে পারে বলে আশায় রয়েছেন তাঁরা।
বিহারের দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক মুখ – নীতীশ কুমার এবং লালু প্রসাদ যাদব, উভয়েই ওবিসি গোষ্ঠীর মানুষ। কেন্দ্রের তরফে যখন জাতিগত সুমারি নিয়ে এমন একটি নাতিশীতোষ্ণ মনোভাব দেখানো হচ্ছে, তখন নীতীশ রাজ্য-ভিত্তিক জাতিগত সুমারি করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সম্প্রতি, বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছিলেন, তিনি এই জাতিগত সুমারির বিষয়ে একটি সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু জোট সঙ্গী বিজেপির তাতে মত না থাকায় বিষয়টি আর বেশিদূর এগোয়নি।
বিহারে এখন জেডিইউয়ের একার রাজ হারিয়েছে। সংখ্যাতত্ত্বের নিরীখে বিধায়ক দল অনেকটা দুর্বল। বিহারের সরকারে এখন আর নীতীশের একার রাজত্ব নেই। বিজেপি এখন বিহার সরকারের অন্যতম চালিকাশক্তি। বিধায়ক সংখ্যার দিক থেকে প্রধান বিরোধী দল আরজেডির পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন : COVID Vaccine Certificate: ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে করোনা টিকার শংসাপত্রে থাকবে না মোদীর ছবি