চণ্ডীগঢ় : পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটের এখনও প্রায় মাস ছয়েক দেরি। আগামী বছরের শুরুর দিকে পঞ্জাবে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু সময় একেবারেই নষ্ট করতে চাইছে না গেরুয়া শিবির। ভোটের আগে সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন পঞ্জাবের বিজেপি প্রধান অশ্বিনী শর্মা। তৈরি করা হচ্ছে নীল নকশা। প্রাক্তন সেনাকর্তা তথা লেখক কর্নেল জয়বংশ সিংকে দলের রাজ্য কমিটির মিডিয়া উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া কুলদীপ সিং কালনকে বিভিন্ন বিতর্কসভায় দলের প্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি হরবিন্দর সিং কালনকে দলের রাজ্য কমিটির মুখপাত্রের ভূমিকা পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পঞ্জাব বিজেপির বুদ্ধিজীবী সেলের সহ-আহ্বায়ক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে চিকিৎসক জসবিন্দর সিং ডিলনকে। পঞ্চায়েত সেলের সহ-আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন সুখপাল ব্রার এবং বলজিন্দর সিং ডাকোহা। এছাড়া সংগঠনের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্মলজিৎ সিং, জগমোহন সিং সাইনি, কবিতা সরোয়াল এবং জীবন মহাজনকে।
সম্প্রতি পঞ্জাবের মসনদে থাকা কংগ্রেসের সময় মোটেই ভাল যাচ্ছে না। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং আর অন্যদিকে পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি নভজ্যোৎ সিং সিধু। আড়াআড়ি বিভক্ত দুই শিবির। কংগ্রেস হাইকমান্ডের বারবার হস্তক্ষেপেও কোনওভাবেই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না পরিস্থিতি। আর ঠিক এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। কংগ্রেসের যখন ঘর ভাঙছে, তখন পঞ্জাবে নিজেদের শক্তি যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি শিবির।
তবে বিজেপির জন্য আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন মোটেই সহজ হবে না। এবারের ভোট পঞ্জাবের মাটিতে নিজেদের শক্তি পরীক্ষার লড়াই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এর আগেও বিজেপি পঞ্জাবের তখত ছিল। কিন্তু সে সময় সঙ্গী ছিল শিরোমণি অকালি দল। এখনও পর্যন্ত যে ক’বার শিরোমণি অকালি দল – বিজেপি জোট পঞ্জাবের ক্ষমতায় এসেছে প্রতিবারই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অকালি দলের থেকে। আরও আগে জন সংঘ থাকাকালীনও একই ছিল পরিস্থিতি। পঞ্জাবের মাটিতে অকালি দল ছাড়া এককভাবে বিজেপির শক্তি পরীক্ষা এখনও হয়নি। বিজেপি কোনও মুখ্যমন্ত্রীও পায়নি এখান থেকে।
আর এই অকালি দলই এখন বেঁকে বসেছে। পঞ্জাবে নিজেদের গড় ধরে রাখতে কৃষক বিক্ষোভের পাশে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা ছিন্ন করেছে। সুতরাং, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে অকালি দলকে ছাড়াই ময়দানে নামতে হবে বিজেপি নেতৃত্বকে। আর এই কাজটা যে মোটেই হালকাভাবে নেওয়া যাবে না, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন পঞ্জাবের বিজেপি প্রধান অশ্বিনী শর্মা। আর সেই কারণেই কোনও সময় নষ্ট না করে পঞ্জাবে নিজেদের পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করার কাজে নেমে পড়েছেন তিনি।
বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে শিখ ভোটব্য়াঙ্কের দিকে। আর সেই কারণেই পঞ্জাবের বিভিন্ন প্রান্তের শিখ সম্প্রদায়ের বিশিষ্টজনদের দলে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অকালি দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর শিখ ভোটারদের নিজেদের দিকে টেনে রাখতেই বিজেপির এই কৌশলী চাল বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর বাবার বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের পুলিশের, বাঘেল বললেন ‘আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়’