নয়া দিল্লি: প্রাপ্তবয়স্ক একটি ছেলে ও একটি মেয়ে বিয়ে না করেও স্বামী-স্ত্রীর মতো একসঙ্গে থাকতে পারে। অর্থাৎ লিভ-ইন সম্পর্ককে (Live-in relationship) মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টও। কিন্তু, লিভ-ইন সম্পর্ক সমাজের জন্য ‘ভয়ঙ্কর অসুখ’ বলে সংসদে উল্লেখ করলেন বিজেপি সাংসদ ধরমবীর সিং। শুধু তাই নয়, এই ভয়ঙ্কর অসুখকে সমাজ থেকে উৎখাত করা জরুরি জানিয়ে এর বিরুদ্ধে আইন আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদনও জানান হরিয়ানার সাংসদ (BJP MP)। কেবল লিভ-ইন সম্পর্ক নয়, প্রেমঘটিত বিয়ের বিষয়েও অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার কথা বলেন তিনি।
শুক্রবার লোকসভার ‘জিরো আওয়ার’-এ লিভ-ইন সম্পর্ক থেকে প্রেমঘটিত বিয়ে এবং ব্যক্তিজীবন থেকে সমাজে এগুলির প্রভাবের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন বিজেপি সাংসদ ধরমবীর সিং। প্রেমঘটিত বিয়ের হার বাড়ার জন্যই বিবাহ-বিচ্ছেদের হার বাড়ছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “বিয়ে হল একটি পবিত্র সম্পর্ক। আমেরিকার যেখানে বিবাহ-বিচ্ছেদের হার ৪০ শতাংশ, সেই তুলনায় ভারতে ডিভোর্সের হার মাত্র ১ শতাংশ। দেখাশোনা করে বিয়ের ক্ষেত্রে ডিভোর্সের হার কম এবং প্রেমঘটিত বিয়ের ক্ষেত্রেই এই হার বেশি বলেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।” এর কারণ উল্লেখ করে হরিয়ানার সাংসদ বলেন, “দেশের বিস্তীর্ণ অংশে প্রেমঘটিত বিয়ে একই ‘গোত্রে’ হয় না এবং তার ফলেই প্রেমঘটিত বিয়েতে অনেক বেশি সংঘাতের সৃষ্টি হয়। যার ফলে বহু পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়।” এই ধরনের বিয়েতে দুই পরিবারেরই সম্মতি থাকা গুরুত্বপূর্ণ এবং তাঁদের মতামত নিয়েই বিয়ে করা উচিত বলে পরামর্শ দেন সাংসদ।
প্রেমঘটিত বিয়ে নিয়ে বিশেষ পরামর্শ দেওয়ার পরই লিভ-ইন সম্পর্ক নিয়ে সতর্কবার্তা দেন ধরমবীর সিং। তিনি বলেন, “বর্তমান সমাজে একটি নতুন অসুখের প্রাদুর্ভাব হয়েছে, যার নাম লিভ-ইন রিলেশনশিপ। এই সম্পর্কের অধীনে পুরুষ ও মহিলা বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকেন। এই ধরনের সম্পর্ক পশ্চিমী দেশগুলিতে খুবই সাধারণ ঘটনা। কিন্তু, আমাদের সমাজেও এই খারাপ বিষয়টি দ্রুত গতিতে বাড়ছে এবং তার পরিণতি ভয়ঙ্কর।” এপ্রসঙ্গে শ্রদ্ধা ওয়াকার ও আফতাব পুনাওয়ালার উদাহরণ তুলে ধরেন বিজেপি সাংসদ। তাঁরা একসঙ্গে থাকতেন এবং আফতাব যেভাবে শ্রদ্ধাকে হত্যা করে দেহ টুকরো-টুকরো করেছিল, তার উল্লেখ করে সাংসদ বলেন, “কেবল এই একটি ঘটনা নয়, আমাদের সমাজে এরকম বিদ্বেষ দ্রুতগতিতে বাড়ছে। এরকম যদি চলতে থাকে, তাহলে আমাদের সংস্কৃতির মৃত্যু ঘটবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের কোনও ফারাক থাকবে না।”