নয়া দিল্লি: অর্থনৈতিক অপরাধের জন্য যাদের হেফাজতে নেওয়া হবে, তাদের হাতকড়া পরানো যাবে না। হাতকড়ার ব্যবহার শুধুমাত্র ধর্ষণ এবং হত্যার মতো জঘন্য অপরাধের গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই করা উচিত। সোমবার (১৩ নভেম্বর), এমনই সুপারিশ করল বিজেপি সাংসদ ব্রিজলালের নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গ্রেফতারের পর প্রথম ১৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা বা বিএনএসএস (BNSS)-এ পরিবর্তনের সুপারিশ করল এই কমিটি।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটি জানিয়েছে, বিএনএসএস-এর ৪৩(৩) ধারায় গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তদের হাতকড়া পরানোর কথা বলা হয়েছে। যাতে তারা পালাতে না পারে এবং গ্রেফতারির সময় পুলিশ কর্তা ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই এই নিয়ম রয়েছে। তবে কমিটির মতে, ‘অর্থনৈতিক অপরাধ’-কে এই বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা অনুচিত। কারণ, ‘অর্থনৈতিক অপরাধ’ শব্দবন্ধের ভিতরে বেশ কিছু অপরাধ পরে। এর মধ্যে ছোটখাট অপরাধ থেকে শুরু করে গুরুতর অপরাধও রয়েছে। সেইজন্য, এই বিভাগের অধীনে আসা সমস্ত ক্ষেত্রেই হাতকড়ার প্রয়োগ করা উপযুক্ত নাও হতে পারে। তাই এই ধারা থেকে ‘অর্থনৈতিক অপরাধ’ শব্দবন্ধটি মুছে ফেলার সুপারিশ করেছে কমিটি।
চলতি বছরের ১১ অগস্ট, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩ এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম, ২০২৩-এর সঙ্গেই ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩ বিলটি লোকসভায় পেশ করেছিল সরকার। এই প্রস্তাবিত তিন দণ্ডবিধি দিয়ে, যথাক্রমে ভারতীয় দণ্ডবিধি, ১৮৬০, ভারতীয় সাক্ষ্য আইন, ১৮৭২ এবং ফৌজদারি বিধি, ১৮৯৮-কে প্রতিস্থাপন করতে চায় মোদী সরকার।
ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩-এর ৪৩(৩) ধারায় বলা হয়েছে, “অপরাধের প্রকৃতি এবং গুরুত্ব বিবেচনা করে, কোনও ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার সময় হাতকড়া ব্যবহার করতে পারেন পুলিশ অফিসার। দাগী অপরাধী, যার আগে অপরাধের ইতিহাস আছে, যে হেফাজত থেকে পালিয়েছে, সংগঠিত অপরাধের সঙ্গে যুক্ত, সন্ত্রাসবাদী, মাদক সংক্রান্ত অপরাধে যুক্ত, অবৈধভাবে অস্ত্র ও গোলাবারুদ রেখেছে যে, কিংবা হত্যা, ধর্ষণ, অ্যাসিড হামলা, মুদ্রা জাল করা, মানব পাচার, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধ, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ ভারতের সার্বভৌমত্ব, একতা ও অখণ্ডতাকে বিপন্নকারী এবং অর্থনৈতিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের হাতকড়া পরানো যেতে পারে।”