তাওয়াং: চারিদিকে শুধু পাহাড়, মাঝে একফালি জমি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায়, পাহাড়ের কোলেই অবস্থান করছে তাওয়াং। অরুণাচল প্রদেশের এই ছোট্ট শহরই বর্তমানে চর্চায়। কারণ দিন কয়েক আগেই, রাতের অন্ধকারে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করে তাওয়াংয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন লাল ফৌজ। তাদের মোক্ষম জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। লাঠিপেটা করে ফেরত পাঠানো হয়েছে চিনের ৩০০ সৈন্যকে। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, একবারে দমার পাত্র নয় জিনপিংয়ের দেশ। ফের হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে চিন। সেই কারণেই অরুণাচল প্রদেশে বাড়ানো হয়েছে সেনা প্রহরা। আকাশে টহল দিচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানও। এই যুদ্ধ আবহেই অতি তৎপরতার সঙ্গে সুড়ঙ্গ তৈরি করছে বিআরও। অরুণাচল প্রদেশের দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে যাতে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়, তার জন্যই তৈরি করা হচ্ছে এই সুড়ঙ্গ।
দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল তাওয়াংকে পাখির চোখ বানিয়েছে চিন। তাওয়াংয়ের আঞ্চলিক অবস্থানের জন্যই বহু বছর ধরে লাল ফৌজের নজর রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের এই অঞ্চলে। তাওয়াং থেকে সহজেই নজরদারি রাখা যায় উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম তিব্বতে। ভুটান সীমান্তেও নজরদারি চালায় ভারত। বেজিংয়ের ধারণা, যদি তাওয়াং দখল করা যায়, তবে গোটা উত্তর-পূর্বের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে চলে আসবে। সেই কারণেই গত ৯ ডিসেম্বরই তাওয়াং দিয়ে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল চিন।
তাওয়াংয়ে চিনের অনুপ্রবেশের চেষ্টার পরেই একদিকে যেমন সেনা তৎপরতা বেড়েছে, তেমনই সেনাবাহিনীর কাছে যাতে সহজেই রসদ তৈরি পৌঁছে দেওয়ার জন্য সুড়ঙ্গ তৈরি করছে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন বা বিআরও। পাহাড় কেটে তৈরি করা হচ্ছে সুড়ঙ্গ।
তাওয়াংয়ের ঠিক পাশ দিয়েই তৈরি হচ্ছে এই সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গের রাস্তা দিয়ে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে চিন সীমান্তে। যুদ্ধ বাধলে দ্রুত যাতে সেনাবাহিনীর কাছে প্রয়েজনীয় অস্ত্রশস্ত্র, রসদ পৌঁছে দেওয়া যায়, তার জন্যই এই সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। এই সুড়ঙ্গের আয়তন এতটাই বড় যে সহজেই এর ভিতর দিয়ে সামরিক ট্যাঙ্কারগুলিও সীমান্তে পৌঁছে যেতে পারবে।