নয়া দিল্লি: আফগানিস্তানের পরিস্থিতি শোধরাতে উদ্যোগী ব্রিকস(BRICS)-র সদস্য় দেশগুলি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-র প্রতিনিধিত্বে বৃহস্পতিবার ব্রিকস সম্মেলনে সদস্য পাঁচটি দেশই শান্তিপূর্ণভাবে আফগানিস্তান(Afghanistan)-র পরিস্থিতির উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করলেন। আফগানিস্তানে স্থিতাবস্থা, আইন-কানুন ও শান্তি বজায় রাখতে আলোচনার প্রসঙ্গেও সমর্থন জানানো হয়।
এ বারের ব্রিকস সম্মোলনের বিষয়বস্তু “ধারাবাহিকতা ও ঐকমত্যের জন্য সহযোগিতা” হলেও সবথেকে আলোচ্য বিষয় ছিল আফগানিস্তানের পরিস্থিতিই। বৃহস্পতিবার ব্রিকসের ভার্চুয়াল শীর্ষবৈঠকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস মোবাবিলায় যৌথ উদ্যোগের প্রস্তাব সর্বসম্মত ভাবে গৃহীত হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘ আফগানিস্তান তার প্রতিবেশী দেশগুলির কাছে সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক পাচারের উৎস হয়ে উঠুক, এটি কখনওই কাম্য নয়।’’ এই প্রসঙ্গে আলোচনায় বিগত কয়েক দশক ধরে আফগান নাগরিকদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াইয়ের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠক শেষে নয়া দিল্লির তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির পাশাপাশি মানবিক পরিস্থিতির উপর বিশেষ নজর এবং নারী, শিশু ও সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার বজায় রাখার উপরও জোর দেওয়া হয়েছে।
ব্রাজিল, রাশিয়া, চিন, ভারত ওদক্ষিণ আফ্রিকার যৌথ বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি যাতে আফগানিস্তানকে প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করতে না পারে ও অন্যান্য দেশগুলির উপর হামলা না চালায়, এই বিষয়গুলিতেও বিশেষ গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়।
বৈঠক শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সদস্য দেশগুলি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আন্তর্জাতিক সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী গতিবিধি ও জঙ্গি সংগঠনগুলিকে আর্থিক মদত ও নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ারও বিরোধিতা করা হচ্ছে।
বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “আফগানিস্তানে যদি স্থিতাবস্থা না ফেরে, তবে প্রতিবেশী দেশগুলির উপর হামলার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। আফগানিস্তান যেন প্রতিবেশী দেশগুলির জন্য বিপদ না হয়ে ওঠে এবং সন্ত্রাসবাদ ও মাদক পাচারের উৎস না হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সে দেশের বাসিন্দাদের অধিকার রয়েছে নিজের দেশকে সঠিকভাবে তৈরি করার।”
আমেরিকাকেই দোষারোপ করে পুতিন বলেন, “আমেরিকা ও তাদের সহযোগী দেশগুলি সেনা প্রত্যাহার করে আফগানিস্তানে এক নতুন সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। সমগ্র বিশ্বের নিরাপত্তাই এক বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে এবং কূটনৈতিক স্থিতাবস্থা নষ্ট হয়েছে।”
আফগানিস্তানের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব না দিয়েই আমেরিকা তথাকথিত গণতন্ত্র তৈরি করতে গিয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে বলে দাবি করেন রাশিযার প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে গোটা আন্তর্জাতিক মহলকেই আমেরিকার তৈরি করা এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।