নয়া দিল্লি: পাশে খোলা থাকবে বই। এভাবেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে শিক্ষার্থীরা। না, কোনও টুকলি গ্যাংয়ের কথা হচ্ছে না। পরীক্ষা পদ্ধতিটাই আমূল বদলে ফেলতে চলেছে সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন বা সিবিএসই-র (CBSE)। গত কয়েক বছরে শিক্ষা পদ্ধতিতে বেশ কিছু বড়বদল এনেছে সিবিএসই। এবার সেই তালিকায় আরও এক নয়া বিষয় যোগ হল। সিবিএসই-র মিডিয়া অ্যান্ড পিআর বিভাগের ডিরেক্টর, রমা শর্মা জানিয়েছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ওপেন বুক এক্সামিনেশন’ বা ‘বই খুলে পরীক্ষা’ পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা করছে সেন্ট্রাল বোর্ড। বই খুলে পরীক্ষার বিষয়ে রমা শর্মা বলেন, “এই তথ্যটি সঠিক। ২০২৩ সালে যে গভর্নিং বডির সভা হয়েছিল, তাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিগগিরই পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হবে।”
সূত্রের খবর, চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নবম এবং দশম শ্রেণির গণিত, বিজ্ঞান এবং ইংরেজি এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান, ইংরেজি এবং গণিত বিষয়ে বই খুলে পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে, সব জায়গায় নয়, সেন্ট্রাল বোর্ডের বেছে নেওয়া কয়েকটি স্কুলে বই খুলে পরীক্ষা নেওয়া হবে। পাইলট প্রকল্পের সাফল্য-অসাফল্যের উপর নির্ভর করছে এর ভবিষ্যৎ। যদি দেখা যায়, এই পদ্ধতিতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না, সেই ক্ষেত্রে সব স্কুলে এবং সব বিষয়ের জন্য এই পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা যায় কিনা, তা বিবেচনা করা হবে। শুধু তাই নয়, পাইলট প্রকল্পে এই পরীক্ষা পদ্ধতির বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করা হবে।
অনেকেই ভাবতে পারেন, বই সঙ্গে থাকলে তো সব দেখে দেখেই লিখে ফেলতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এ আবার কেমন পরীক্ষা? কিন্তু, প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতির তুলনায় ওপেন বুক এক্সাম মোটেই সহজ নয়। কারণ এই ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্মৃতিশক্তির মূল্যায়ন করা হয় না। বদলে, তারা কোনও একটি নির্দিষ্ট বিষয় কতটা বুঝেছে, কতটা সে বিশ্লেষণ করতে পারছে, তার মূল্যায়ন করা হয়। সিবিএসই-র কর্তারা বলছেন, বই খুলে পরীক্ষায়, শিক্ষার্থীদের চিন্তা করার ক্ষমতা, প্রয়োগ ক্ষমতা, সমালোচনামূলক এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনা করার ক্ষমতা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা মূল্যায়নের উপর জোর দেওয়া হবে। কোনও সরাসরি প্রশ্ন থাকবে না, যার উত্তর বই দেখে লিখে দেওয়া যাবে। বরং প্রশ্নগুলি হবে বিশ্লেষণাত্বক, ধারণা ভিত্তিক। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে সেই নির্দিষ্ট ধারণাটি স্পষ্ট কিনা, এই পরীক্ষা পদ্ধতিতে সেটাই বিচার করা হবে। সেই স্পষ্টতার প্রমাণ দিতে, বইয়ের সাহায্য নিয়ে তথ্য দিতে পারবে শিক্ষার্থীরা। তারা বিষয়টি কতটা বুঝতে পেরেছে, তার উপর ভিত্তি করে ওই ছাত্র বা ছাত্রীকে নম্বর দেওয়া হবে।